পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২৫৩

এক ব্যক্তির পদতলে সমগ্র ভারত ভক্তিবিহ্বল হইয়া লুটাইতেছে। কিন্তু এই নেহেরুই ছিলেন সুভাষচন্দ্রের প্রতিদ্বন্দ্বী; প্রতিদ্বন্দ্বী বলিলে সুভাষচন্দ্রকে ছােট করা হয়, রাজনৈতিক দলাদলির কথাই মনে হয়। কিন্তু সুভাষচন্দ্র কোন দলের মানুষ ছিলেন না; সকল দলের উপরে যাহা, সেই সত্য―অর্থাৎ ভারতের প্রকৃত মুক্তিই ছিল তাঁহার লক্ষ্য। অতএব পণ্ডিত জবাহরলাল যদি তাঁহার প্রতিদ্বন্দ্বীই হন, তবে বুঝিতে হইবে, সুভাষচন্দ্রের সেই মুক্তি-সংগ্রামে তিনি ছিলেন―বিপক্ষ বা প্রতিবাদী। আজ জবাহরলালই জয়ী হইয়াছেন, ভাগ্যদেবতা তাঁহাকেই জয়মাল্য পরাইয়াছেন; তাই একজনের অসীম দুঃখ, দুশ্চর তপস্যা, আজীবন আত্মত্যাগ ব্যর্থ হইয়াছে, আর, সেই তপস্যার তুলনায় যাহাকে সুকোমল সুখশয্যা বলা যাইতে পারে,―যে পন্থাকে নিরাপদ সুবিধাবাদ বলা যাইতে পারে,―সেই পন্থায় শেষে বৈঠকী আলাপ-আলােচনার সুখকর ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে যে স্বাধীনতা লাত হইয়াছে, সেই স্বাধীনতার রাজ-গৌরব ও রাজ্যসুখ ভােগ করিতেছে আরেক জন। সেইজন যদি নিজেও সুভাষচক্রের নাম উচ্চারণ না করে, প্রজাসাধারণকেও করিতে না দেয়, তবে তাহাতে আশ্চর্য হইবার কি আছে? এই অভিযােগ যে তাহারা করে, তাহাতেই প্রমাণ হয়, তাহারা সুভাষচন্দ্রকে তাঁহার ব্যক্তিগত মহত্ত্বের জন্যই পূজা করে, তাঁহার সেই ব্রত ও সাধন-মন্ত্র তাহারা বুঝে না; বুঝিলে, তাহারা এমন অবুঝের মত আক্ষেপ করিত না।

 কিন্তু না-বােঝা বরং ভালাে, ভুল-বােঝা আরও অনিষ্টকর। আমরা জানি, জনগণকে ভুল বুঝাইবার চেষ্টা হইয়াছে―সে চেষ্টা কতক পরিমাণে সফলও হইয়াছে। একবার, আজাদ-হিন্দ-ফৌজের বন্দী সেনানায়কদের পক্ষ অবলম্বন করিয়া জনগণকে বুঝানো হইয়া-