তাহাতেই আত্মাহুতি দিয়াছিলেন―ইহাই তাঁহারা উচ্চৈঃস্বরে এবং ক্রুদ্ধকণ্ঠে ঘোষণা করিবেন। আমি ইহারও কোন প্রতিবাদ করিব না। কিন্তু যাঁহাদের একটুও চিন্তা করিবার শক্তি আছে, এবং যাঁহারা একেবারে সংস্কার-বদ্ধ নহেন, তাঁহারাই বুঝিতে পরিবেন, গান্ধী-নীতি গোড়া হইতে শেষ পর্য্যস্ত একটা অতি গূঢ় এবং অতি দৃঢ় দ্বৈত-নীতিই ছিল। অধ্যাপক সরকার তাঁহার ঐ প্রবন্ধের শেষে যাহা বলিয়াছিলেন ভবিষ্যৎ ঐতিহাসিক সম্ভবতঃ তাহা একেবারে অস্বীকার করিবেন না―তিনি বলিয়াছেন,“গান্ধীকে সকলযুগেরচরম-সফলতা-প্রাপ্ত, বস্তুনিষ্ঠ রাষ্ট্রবীর, বা নং ১-শ্রেণীর রাষ্ট্রিক খেলোয়াড়বলা যাইতে পারে।”
এই উক্তি সম্বন্ধে একটা বিষয়ে আমাদের আপত্তি আছে―ঐ “সফলতা-প্রাপ্ত”-কথাটিতে। গাছের উপরে উঠিয়া―অতি উর্দ্ধ হইতে পতনের ভয় অগ্রাহ্য করিয়া, সেই গাছের শাখাগ্র-ভাগ সবলে নাড়া দিয়া ফলটি মাটিতে ফেলিয়া দিল যে, সে তাহা পাইল না―পাইল যে, সে কেবল বৃক্ষকাণ্ডে হাত বুলাইতেছিল; ইহাই যদি ‘সফলতা-প্রাপ্তি’ হয়, তবে তাহা সত্য বটে; এমন কি, ‘খেলোয়াড়ি’ও হয়তে মিথ্যা নয়। কিন্তু ঐ ফল এমনই যে, উহা একজন পাড়িবে, আর একজন কুড়াইবে—তাহা হয় না; যে কুড়াইবে তাহাকেই পাড়িতে হইবে। তাই ফলপ্রাপ্তি যদি হইয়াও থাকে―সফলতাপ্রাপ্তি হয় নাই; কিন্তু আমরা ঐ ফলপ্রাপ্তিতেও বিশ্বাস করি না। এতক্ষণ এই যে আলোচনা করিলাম তাহা কেবল ঐ হিংসা ও অহিংসার জয়লাভ―কোনটা কতখানি সত্য, তাহাই দেখাইবার জন্য। যদি ইহাকেও জয়লাভ বলিতে হয়, তবে শ্রীযুক্ত এ, এন, সরকারের সহিত আমরাও বলি–lt was a bloodless victory forsooth, a victory of Ahimsa!”