পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
২৬৫

বলিতে কি বুঝায়, সেই ভারতই তাহা দেখাইয়াছে। সেই নেশন যেমন অখণ্ড-ভারতের নেশন, তেমনই তাহাতে হিন্দু-মুসলমানকে এক করিবার জন্য ধর্ম্মোপদেশ দিতে হয় না, এক পক্ষের সর্ব্বনাশ করিয়া অপর পক্ষের সন্তুষ্টিসাধন করিতে হয় না। অথবা ‘নেশন’নামের ধমক দিয়া জাতি বা প্রদেশ-বিশেষের প্রভূত্ব-প্রতিষ্ঠা করিতে হয় না। এইখানে, একটা কথা প্রসঙ্গক্রমে বলিব। ‘নেশন’ ও ‘স্বাধীনতা’ যদি একই বস্তু হয়, তবে ভারত যে স্বাধীন হয় নাই―তাহার একটা বড় প্রমাণ এই যে, প্রদেশগুলা এখনও পরস্পরে বিবাদ করিতেছে,―এই বিবাদ এমনই সত্য যে, ইহাকে কিছুতেই চাপা দেওয়া যাইবে না। ভারত যদি সত্যই স্বাধীন হইত, তবে সঙ্গে সঙ্গে নেশন-চেতনাও জাগিত; প্রাদেশিক ঈর্ষ্যা এমন প্রকট হইয়া উঠিত না। দাসেরাই ঈর্ষ্যা করে, উহারা আর একটা প্রভু-শক্তির অধীনে দাস হইয়াই আছে। ঐ দাসত্ব―ব্রিটিশ-দাসত্বেরই নামাস্তর।

 কিন্তু যাহা বলিতেছিলাম। অবিশ্বাসীর দল তবু বলিবে―ঐ কীর্ত্তির মূল্য কি? উহা তো নিষ্ফল হইয়াছে, অতএব উহা মিথ্যা। বিশ্বাসীরা বলিবে, উহা সত্য বলিয়াই নিষ্ফল হইতে পারে না―যে সত্য-সফলতা উহাতে নিহিত আছে তাহা আর একটু কালসাপেক্ষ। যে মিথ্যা-সফলতা আজ এমন গৌরবমণ্ডিত হইয়াছে তাহাই চির-মিথ্যায় বিলীন হইবে―ঐ অচির-মিথ্যাই চির-সত্যে প্রতিষ্ঠিত হইবে। আমি যে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের কথা বলিয়াছি, সে বিশ্বাস সুভাষচন্দ্রকে বিশ্বাস নয়। যাহারা মানুষকে বিশ্বাস করে, যাহারা প্রেমকে, ত্যাগকে বিশ্বাস করে, এবং যাহারা ভারতের মুক্তিতে বিশ্বাসী―আমি, তাহাদিগকেই বিশ্বাসী বলিয়ছি। আর, যাহারা সত্যকে, প্রেমকে, ত্যাগকে এবং ভারতের মুক্তিকেও তাহাদের