পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৸৹

 আর একটি কথা আমাকে দুঃখের সহিত বলিতে হইতেছে। এই পুস্তক যখন লিখি তখন সুভাষচন্দ্রের জীবনবৃত্ত বা অন্যবিধ পরিচয়-কাহিনীর অনেকগুলিই প্রকাশিত হয় নাই; যাহা হইয়াছিল তাহার দুই চারিথানি মাত্র (অধিকাংশ ইংরাজী) পড়িবার সুযোগ পাইয়া বিশেষ আনন্দ লাভ করিয়াছিলাম। কিন্তু পরে একখানি পুস্তক পড়িয়া বড়ই বিস্মিত ও মর্ম্মাহত হইয়াছি। বইখানি সুভাষচন্দ্রের অন্তরঙ্গ বন্ধু শ্রীযুক্ত দিলীপকুমার রায়ের “The Subhas I Knew”। এই পুস্তকে দিলীপকুমার তাঁহার বন্ধুর সম্বন্ধে শেষ পর্য্যন্ত যে ধারণা ব্যক্ত করিয়াছেন, তাহার মত অমূলক ও অবিচারী আর কিছু হইতে পারে না। তিনি তাঁহার নিজের সাধন-জীবনের উচ্চভূমি হইতে সুভাষ-চরিত্র বিচার করিয়াছেন, তাঁহার সেই দৃষ্টিতে বন্ধুর অধঃপতন দেখিয়া দুঃখ প্রকাশ করিয়াছেন; কারণ, সুভাষচন্দ্রের প্রথম-জীবনের যে পরিচয়ে তিনি তাঁহার প্রতি আকৃষ্ট হইয়াছিলেন, শেষে সুভাষচন্দ্রের রাজনৈতিক কার্য্য-কলাপে তাঁহার সেই আধ্যাত্মিক শুচিতার নাকি হানি হইয়াছে। শেষে আজাদ-হিন্দ্ সেনার নেতাজী-রূপে সুভাষচন্দ্র যেরূপ আত্ম-গৌরব প্রচার করিতেন তাহাতে তাঁহার আত্মার মলিনতাই প্রমাণিত হয়। সুভাষচন্দ্র তাঁহার সৈন্যদল সমক্ষে এমন কথাও নাকি বলিয়াছিলেন যে, তাঁহাকে মারিবে এমন বোমা ইংরেজ কখন তৈয়ারী করিতে পারিবে না। এমন আত্মশ্লাঘা কোন সাধু ও সত্যনিষ্ঠ পুরুষ করিতে পারে? মানুষ হইয়া―ভগবানের দাস হইয়া―এমন দম্ভ! আমি এই পুস্তকের উল্লেখ করিতাম না, কিন্তু অন্তরঙ্গ বন্ধু বলিয়া সুভাষচন্দ্র সম্বন্ধে দিলীপকুমারের সাক্ষ্য ও উক্তিসকলের কিছু মূল্য আছে। ঐ পুস্তকে তেমন অনেক কথা আছে, আমি এই দ্বিতীয় সংস্করণের পাদটীকায় তাহার কয়েকটি উদ্ধৃত