পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৬৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
স্বামীজী ও নেতাজী
২৩

মুক্তি-সাধনার অনুকুল করা হইয়াছে; কিন্তু সেই ব্যক্তিগত মুক্তি-সাধনাকে তুচ্ছ করিয়া এই যে মানব-প্রেম, এবং বিশেষ করিয়া স্বদেশ ও স্বজাতি-প্রেম, ভারতবর্ষে ইহা নূতন; আবার এই প্রেমও যে অধ্যাত্ম-পিপাসারই একটা রূপ, তাহা একমাত্র ভারতবর্ষেই সম্ভব। সন্ন্যাসী না হইলে, বৈরাগ্যের দ্বারা সুরক্ষিত না হইলে, প্রেম এমন নির্ভীক ও বলীয়ান হইতে পারে না, প্রাণ এমন মুক্ত ও স্বাধীন হইতে পারে না। দ্বিতীয়তঃ, সেই কারণেই কোন সমাজ-বন্ধন না থাকায়, তিনি দেশের সকল সমাজে মিশিয়া, সকল প্রকার জীবন-যাত্রা আপন চক্ষে দেখিবার ও আপন বক্ষে বুঝিবার সুযােগ পাইয়াছিলেন। দেশকে ভালবাসার মূলে ছিল―দেশের যাতনাক্লিষ্ট সর্ব্ব-অঙ্গের সহিত এই ঘনিষ্ঠ পরিচয়। ঐ পরিচয়ের কাহিনী মহাকাব্য অপেক্ষাও রােমাঞ্চকর; এখানে সে বিষয়ে কিঞ্চিৎ উদ্ধৃত করা অপ্রাসঙ্গিক হইবে না। একদা, প্রায় দুই বৎসর তিনি সমগ্র ভারত পর্য্যটন করিয়াছিলেন―ইহা সেই সময়ের কথা। তাঁহার জীবনবৃত্তকার লিখিয়াছেন―

 সকল মানুষের সঙ্গে তিনি সমপদস্থের ন্যায় ব্যবহার করিতেন―ছােট-বড়-ভেদ ছিল না। অস্পৃশ্য পারিয়ার গৃহেও তিনি যেমন দরিদ্র-ভিক্ষুকের বেশে আশ্রয় লইতেন, তেমনি রাজা-জমিদারদিগের প্রাসাদে তাঁহাদের সমকক্ষ-রূপে আতিথ্য গ্রহণ করিতেন। গরীব-দুঃখীর ঘরে, কোথাও গােয়ালের মাচায়, কোথাও বা মাটিতে ছেঁড়া চাটাই-এর উপরে একত্র শয়ন করিয়া রাত্রি যাপন করিতেন,―সমাজে যাহারা পতিত ও