পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৭৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
স্বামীজী ও নেতাজী
৩৯

নেতাজী মুখ্যত কর্ম্মবীর, তাঁহার প্রতিভার চরম নিদর্শন তাঁহার সেই আশ্চর্য্য কর্ম্মকুশলতা। স্বামীজীর প্রতিভা মুখ্যতঃ এইরূপ নহে, সে প্রতিভা মানুষকে জাগাইবার প্রতিভা; তাই একজনের নাম “স্বামীজী”, অপরের নাম “নেতাজী”,―দুইটিই সার্থক হইয়াছে। স্বামীজীর স্বপ্ন মানুষের আত্মার মতই বিরাট, তাহার গৌরবও স্বতন্ত্র; নেতাজীর স্বপ্ন মানুষের দেহ-প্রাণের পরিধিতেই সীমাবদ্ধ। এই সীমাবদ্ধ করার শক্তিও একটা বড় শক্তি, ইহাই প্রকৃত কর্ম্মবীরের প্রতিভা; স্বামীজীর সে প্রয়োজন ছিল না, তিনি তখন সাক্ষাৎ কর্ম্ম অপেক্ষা কর্ম্মের প্রেরণাটাকেই মহৎ ও বিশুদ্ধ রাখিতে চাহিয়াছিলেন; তাঁহার সেই বৈদান্তিক আদর্শকে ক্ষুণ্ণ করিতে পারেন নাই বলিয়া কাশ্মীরের সেই ঘটনার পর তিনি আত্মসংহরণ বা আত্ম-সমর্পণ করিতে বাধ্য হইয়াছেন―পুনরায় সেই বিরাটের স্বপ্নে মগ্ন হইয়া হৃদয়ের জ্বালা ভুলিবার উপায় করিয়াছিলেন। নেতাজী যেন ঠিক তাহার পরেই, ঠিক সেইখানেই উঠিয়া দাঁড়াইলেন―একজন যেন পাণ্ডবজ্যেষ্ঠ যুধিষ্ঠির, আর একজন গাণ্ডীবধন্বা সব্যসাচী!

 কিন্তু স্বামীজী ও নেতাজীর মধ্যে যেখানে গভীরতর একাত্মীয়তা আছে সেইখানে দৃষ্টি নিবদ্ধ করিতে না পারিলে উভয়ের কাহাকেও আমরা সম্পূর্ণ বুঝিতে পারিব না। নেতাজী যে এক অর্থে স্বামীজীর মানস-পুত্র তাহাতে সন্দেহ নাই; একজনের হৃদয়ে যাহা বীজরূপে ছিল আরেক জনের জীবনে তাহাই বৃক্ষরূপ ধারণ করিয়াছে। তত্ত্বজ্ঞান বা মুক্তিতত্ত্বকেও