পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৮২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪২
জয়তু নেতাজী

নিভৃত প্রদেশে আত্মসাধনায় রত আছেন। হঠাৎ, প্রায় দুই বৎসর পরে, দক্ষিণ ভারতের এক রেল-ষ্টেশনে দুইজন গুরুভাই তাঁহার দেখা পাইয়া আশ্চর্য্য হইয়া গেলেন। কিন্তু এ মূর্ত্তি ত’ নিবাত-নিষ্কম্প জ্যোতিঃশিখার মত নয়! ইহার ভিতরে যে ঝড় বহিতেছে―দুই চক্ষে রুদ্ধবর্ষণ অশ্রুমেঘ! অতঃপর সেই সন্ন্যাসীর কণ্ঠে উচ্চারিত হইল―“আমি সারা ভারত ভ্রমণ করিয়াছি―আমার বুক ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। জনগণের কি ভীষণ দারিদ্র্য, কি শোচনীয় দুর্দ্দশা দুই চক্ষে দেখিলাম! আমার কান্না থামিতেছে না। এখন বুঝিয়াছি, ধর্ম্মপ্রচার করিবার সময় এ নহে। এই দারিদ্র্য ও দুর্গতি আগে নিবাবণ করিতে হইবে। ইহার একটা উপায় চিন্তা করিয়া আমি আমেরিকায় যাইতে মনস্থ করিয়াছি।” ইহার পর স্বামী তুরীয়ানন্দকে সম্বোধন করিয়া বলিয়া উঠিলেন, “হরি-ভাই! আমি তোমাদের ঐ ধর্ম্মকর্ম্মের কোন মর্ম্মই বুঝিতেছি না। আমি আমার বুকে মধ্যে একটা বড় জিনিস পাইয়াছি―আমি মানুষের দুঃখ অনুভব করিতে শিখিয়াছি।” স্বামী তুরীয়ানন্দ বলিয়াছেন, “এ যেন ঠিক সেই বুদ্ধের মত―সেই ভাব, সেই কথা।”

 নেতাজীর অন্তরে কেহ প্রবেশ করিয়াছে? যদি করিয়া থাকে তবে বলিয়া দিতে হইবে না, তাঁহার হৃদয়েও ঠিক এই ঘটনাই ঘটিয়াছিল। সেদিন আজাদ-হিন্দ-ফৌজের ইতিহাসে―দুইজন পৃথক লেখকের পৃথক কাহিনীতে―দুইবার দুই উপলক্ষ্যে নেতাজীর যে অদ্ভুত ভাব-সমাধির উল্লেখ দেখিলাম,