পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/৯৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫৬
জয়তু নেতাজী

শিক্ষালাভ করিয়া যাহারা তাহাদের প্রসাদপিপাসু হইয়াছে তাহাদিগকেই তৃপ্ত করিবার জন্য এমন একটু ব্যবস্থা হইলেই হইল, যাহাতে প্রভুদের সেই প্রসাদ-বিতরণে কিঞ্চিত দাক্ষিণ্য থাকে, সঙ্গে সঙ্গে পদাঘাত-প্রাপ্তিও না ঘটে। দাসত্ব যাহাদের পক্ষে বড় সুখকর হইয়াছে, সমাজবন্ধন নাই, রাজ্যশাসনের ভাবনা বা দায়িত্ব ত’ নাই-ই―একটা দেবতুল্য জাতির অভিভাবকতায় যাহারা পরম শান্তিতে বাস করিতেছে - তাহারা সেই অবস্থার পরিবর্ত্তন চাহিবে কেন? তাহাদের নিকটে সত্যকার স্বাধীনতা অতিশয় ভয়াবহ, তাই প্রভুদের নিকটে তাহাদের সেই শিক্ষা ও সভ্যতার মর্য্যাদাই তাহারা প্রার্থনা করিয়াছিল। ইহাই আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামের আদিপর্ব্ব, তাহাতে স্বাধীনতার একটা ভাববিলাস বা অনুকরণমূলক অভিনয়মাত্র ছিল, কোন ক্ষুধাই ছিল না।

 থাকিবে কেমন করিয়া? আজ যে বন্ধন-মুক্তির প্রয়োজন হইয়াছে তাহার জন্য এই জাতির নবজন্মের প্রয়োজন, সেই নবজন্ম না হইলে―স্বাধীনতার অভাব-বোধ বা তীব্র ক্ষুধা জাগিবে কেমন করিয়া? ইংরেজ-শাসক ও ইংরেজী শিক্ষার ফলে তাহার সহস্র বৎসরের সংস্কার মিথ্যা হইয়া গিয়াছে। আজ নূতন করিয়া মুক্তিপিপাসা―মুক্তিকামনা চাই, তবে ত’ এই স্বাধীনতার অর্থ সে বুঝিবে; যে সংস্কার তাহার কখনো ছিল না, সেই সংস্কার তাহার রক্তের ভিতরে, তাহার আধ্যাত্মিক চেতনায় না জাগিলে সে তাহার জন্য ব্যাকুল হইবে কেন?