পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বদেশী যুগে ঊষা
৪১

নাই। দারিদ্র্য-ব্রত গ্রহণ করিয়া স্বদেশের সেবায় আপনাকে নিয়োজিত করিয়াছিলেন। তাঁহার বেশভূষা, পোষাকপরিচ্ছদ দেখিলে মনে হইত, বাহ্য জগতের সঙ্গে তাঁহার কোন সম্বন্ধ নাই; সর্বদা আত্মসমাহিত, প্রসন্ন হাস্যে মুখমণ্ডল উদ্ভাসিত। প্রথম যখন জাতীয় শিক্ষা-পরিষদ গঠিত হয়, তখন সতীশবাবুই তাঁহার শিষ্যদের লইয়া জাতীয় বিদ্যালয়ের ভার গ্রহণ করিয়াছিলেন। এজন্য তিনি নিজে কোন পারিশ্রমিক লইতেন না, বরং দুই এক স্থানে গৃহ-শিক্ষকতা করিয়া যে অর্থ পাইতেন, তাহাও এই জাতীয় বিদ্যালয়ের ভাণ্ডারে দান করিতেন।

 এই সময় আর যে কয়েকজন চিন্তানায়ক বাঙলায় আত্মশক্তির আন্দোলন তথা স্বদেশী ভাবের উদ্বোধনে সহায়তা করিয়াছিলেন, তাঁহাদের মধ্যে মনীষী রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী ও আর্যা নিবেদিতার নাম উল্লেখযোগ্য। বৈজ্ঞানিক রামেন্দ্রসুন্দর রিপণ, কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন এবং বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের প্রাণস্বরূপ ছিলেন। কিন্তু এই বৈজ্ঞানিক, শিক্ষাব্রতী এবং বাঙলা সাহিত্যের একনিষ্ঠ সেবক যে অন্তরালে থাকিয়া স্বদেশীভাবের উদ্বোধনে সহায়তা করিতেন, তাহা হয়তো অনেকে জানেন না। সে সময়ে “সাবিত্রী লাইব্রেরি” নামক একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। ইহার উদ্যোগে মাঝে মাঝে সভা হইত। রামেন্দ্রসুন্দর, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিপিনচন্দ্র পাল প্রভৃতি মনীষী ঐ সমস্ত সভায় বক্তৃতা করিতেন। যুবকগণের চিত্তে জাতীয় আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত করাই ঐ সমস্ত বক্তৃতার