পাতা:জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯৩৬).pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৸৹

উন্নতি লাভ করে। ১৯১৭ সালে যখন পোষ্ট্-গ্রাজুয়েট্ শিক্ষার ভার বিশ্ববিদ্যালয় নিজ হস্তে গ্রহণ করে, তখন আশুতোষের সাহস ও প্রতিষ্ঠানগঠন-নৈপুণ্যে সকলে বিস্মিত হইয়াছিল। ইহার পূর্ব্বে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ছাত্রদিগের পরীক্ষা গ্রহণ করিয়াই দায়িত্ব শোধ করিত। এখন হইতে নানা বিষয়ে সর্ব্বোচ্চ শিক্ষা প্রদান ও গবেষণার ভারও বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করিল। আশুতোষের নেতৃত্বে এই বিশালায়তন নব প্রতিষ্ঠান গঠিত হইল এবং ইহার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করিবার ভারও তাঁহার সুপরিসর স্কন্ধে অর্পিত হইল।

 এই ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গেই আশুতোষ ভারতের দেশীয় ভাষাগুলির পঠন-পাঠনের আয়োজন করিয়া দেশের ধন্যবাদভাজন হইলেন। ইতিপূর্ব্বে বাঙ্গালা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙ্গালা ভাষা ও বাঙ্গালা সাহিত্য অনাদৃত ছিল। কলিকাতায় যখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন বাঙ্গালা সাহিত্য একটি অবশ্যপাঠ্য বিষয়-মধ্যে গণ্য ছিল। কিন্তু ১৮৬৮ সাল হইতে এই ব্যবস্থা উঠিয়া যায়। ইংরেজি সাহিত্যের নূতন রসাস্বাদে বিভোর বাঙ্গালী শিক্ষিত সম্প্রদায় বাঙ্গালা ভাষাকে অবজ্ঞা করিতেই শিক্ষা করিলেন! পাশ্চাত্ত্য শিক্ষা লাভ করিব, পাশ্চাত্ত্য শিক্ষায় বিদ্বান্ হইব, ইহাই তখন ছিল বাঙ্গালীর চরম লক্ষ্য।

 ১৮৮৯ সালে সিনেটের সদস্যপদ প্রাপ্ত হইয়া অল্প দিনের মধ্যেই আশুতোষ সিণ্ডিকেটে প্রবেশ লাভ করেন। তখন হইতেই তাঁহার লক্ষ্য ছিল, কি উপায়ে পুনরায় বাঙ্গালা ভাষাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় অবশ্যপাঠ্য বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এই উদ্দেশ্য-প্রণোদিত হইয়াই তিনি ১৮৯১ সালের ফ্যাকাল্‌টি অব আর্ট্‌স্ সভার একটি অধিবেশনে প্রস্তাব করেন যে, এফ. এ.