পাতা:জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯৩৬).pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৸৶৹

পক্ষে বিভাপতি-চণ্ডীদাস প্রমুখ শ্রেষ্ঠ কবিগণের সুললিত কাব্যগাথার সহিত পরিচিত হইবার সুযোগ প্রদান করিল। এ সকলই আগুতোষের অক্লান্ত চেষ্টার ফল। অনাদৃতা, উপেক্ষিতা বঙ্গভাষার জন্য তিনি যাহা করিয়াছেন, বঙ্গবাসী চিরদিন তাহা কৃতজ্ঞতার সহিত স্মরণ করিবে।

 এম্. এ. পরীক্ষায় ভারতীয় ভাষার পরীক্ষা-গ্রহণের ব্যবস্থা পোষ্ট-গ্র্যাজুয়েট প্রতিষ্ঠান-গঠনের অল্পকাল পর হইতেই প্ররর্ত্তিত হইয়াছে; ইহাও আশুতোষের অন্যতম কীর্ত্তি। ইহার পূর্ব্বে দেশীয় ভাষায় সর্ব্বোচ্চ পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা ভারতের অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয় করিতে পারে নাই। এক্ষণে বঙ্গদেশের প্রায় সমস্ত কলেজেই বাঙ্গালা ভাষার অধ্যাপনার ব্যবস্থা হইয়াছে। নানা বিভাগে যাহাতে বঙ্গভাষার সম্পদ বর্দ্ধিত হয়, তাহার ব্যবস্থা হইতেছে। বঙ্গভাষার ভাগ্যে এরূপ শুভ যুগ আর কখনও আসে নাই বলিলে অত্যুক্তি হয় না। মনস্বী আশুতোষই এই শুভ যুগের প্রবর্ত্তক, ইহা স্মরণ না রাখিলে এই পুস্তকের অধিকাংশ স্থলের মর্ম্ম হৃদয়ঙ্গম করা যাইবে না। আশুতোষ ভগীরথের ন্যায় বঙ্গসাহিত্যের পুণ্যপ্রবাহ আপামর সাধারণের জন্য বঙ্গের সমতল ক্ষেত্রে বহাইয়া দিয়াছেন। তিনি তাঁহার উদাত্ত স্বরে বঙ্গীয় যুবকগণকে বলিতেন: ‘সর্ব্বোপরি, আপ্রাণচেষ্টায় মাতৃভাষার অনুশীলন কর; মাতৃভাষার মধ্য দিয়াই দেশের জনসাধারণের হৃদয় স্পর্শ করিতে পারিবে।’[১]

  1. “Above all, asdulously cultivate your Vernacular, for it is through the medium of the Vernacular alone that you can hope to reach the masses of your countrymen.”