পাতা:জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯৩৬).pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাতীয় সাহিত্য

করস্পর্শে তাহাদের মোহ কাটিয়া যাক, হৃদয়ে বল আসুক, অন্তরের অন্তস্তলে উৎসাহের সঞ্জীবনী ধারা প্রবাহিত হোক;—বাঙ্গালী দ্বেষ-হিংসা ভুলিয়া, আত্মপর ভুলিয়া, এক প্রাণে, একতানে সঙ্গীত ধরুক,—সে সঙ্গীতে বিরাট্ ব্রহ্মাণ্ড ভরিয়া যাক, বাঙ্গালার সাহিত্য বিশ্বসাহিত্যের আসন অধিকার করুক।

 একদিন—সেই অতি প্রাচীনকালে—যখন জ্ঞানবিজ্ঞানের ক্ষীণ রশ্মিও জগতে ফুটে নাই,—বিশ্ব যখন একপ্রকার প্রগাঢ় অন্ধতমসে আচ্ছন্ন—সেই আদিকালে—ভারতের আর্য্যাবর্ত্তে যে বেদগান গীত হইয়াছিল, সেই গানে তখনকার ভারতের সর্ব্বত্র,—“পর্বত-পাথার, সমুদ্র কান্তার” সমস্ত ভরিয়া গিয়াছিল,—সেই এক সঙ্গীতের মধুর আকর্ষণে ভারতবর্ষ যেন একপ্রাণ হইয়া গিয়াছিল,—শ্রৌতযুগের সেই সাহিত্যিক একতা, সেই সঙ্ঘ-বদ্ধ ভাব, সেই চিরনবীন প্রেম, সেই বড় স্পৃহণীয় মিলন,—আর কি হইতে পারে না? সে বৈদিক যুগ নাই, সেই বিরাট্ বৈদিক সাহিত্য আজ অলঙ্ঘ্য হিমাচলের ন্যায় ঐ পড়িয়া আছে,—ভারতে, আবার সেই সাহিত্যিক একতা, মনীষার সম্মেলন একপ্রকার অসম্ভব, একথা বলিলে চলিবে না। সেই হারানো ধন আবার ফিরিয়া পাইতে হইবে; বাঁচিয়া থাকিতে হইলে সেই লুপ্তরত্নের পুনরুদ্ধার করিতে হইবে। কালের বশে চলিয়া আমাদিগকে কালজয়ী হইতে