পাতা:জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯৩৬).pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
জাতীয় সাহিত্য

ভিতর দিয়া যদি এক করিতে পারা যায়, তবেই ভারতে প্রকৃত জাতীয় সাহিত্যের সৃষ্টি হইবে, অন্যথা নহে। এখন এমন একটি সাধারণ সেতু নির্ম্মাণ করিতে হইবে, যাহার উপর দিয়া ভারতের সকল দেশের অধিবাসীরা তাহাদের সর্ব্ববিধ বাধা-বিপত্তি পার হইয়া এক মুক্ত প্রান্তরে আসিয়া পৌঁছিতে পারে। সকলে সাহিত্যের অঙ্গনে এক হইবে, ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই থাকিবে না। অবশ্য কথা বড়ই কঠিন। দেখা যাক, ইহার সমাধান হয় কি না।

 ভারতবর্ষে এখন সাধারণতঃ শিক্ষার কেন্দ্র দেখিতে পাই প্রকৃত পক্ষে একটি; তাহা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাচীন যত কিছু শিক্ষাকেন্দ্র ছিল, ক্রমে তাহা লোপ পাইতেছে, যাহা আছে, তাহাও যায় যায়। নবীনের সঙ্ঘর্ষে সে প্রাচীন পদ্ধতি ক্রমেই হটিয়া যাইতেছে। আর তাহার পুনরুদ্ভবের সম্ভাবনা নাই। এখন আর সে তেঁতুলের পাতার ঝোলে চতুষ্পাঠীর ছাত্র নির্ভর করিতে চায় না, বা অধ্যাপকও নির্ভর করাইতে পারেন না।[১] সে রাম নাই, সে অযোধ্যাও নাই। সব ওলট্-পালট্ হইয়া গিয়াছে। এখন শিক্ষা বলিতে সাধারণতঃ লোকে বোঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, উচ্চশিক্ষিত বলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধিধারী। অভিভাবক এখন স্ব স্ব বালকদিগকে স্কুলকলেজে পাঠাইতে পারিলেই তাঁহাদের শিক্ষার সম্বন্ধে নিজ নিজ কর্ত্তব্য সম্পন্ন হইল মনে