পাতা:জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯৩৬).pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত
৬১

“বড়ই নিষ্ঠুর আমি ভাবি তারে মনে,
লো ভাষা, পীড়িতে তোমা গড়িল যে আগে,
মিত্রাক্ষর রূপ বেড়ি। কত ব্যথা লাগে,
পর যবে এ নিগড় কোমল চরণে—
স্মরিলে হৃদয় মোর জ্বলি উঠে রাগে।
... ... ... ... ...
চীন-নারী-সম পদ কেন লৌহ-ফাঁসে!”[]

প্রেমে হউক, শোকে হউক, আদরে হউক, উপেক্ষায় হউক, মানুষ যখন পাগল-পারা হয়, তখন তাহার সকল বিষয়েই শৃঙ্খল ভাঙ্গিয়া যায়, সে তখন উদ্দাম ভাবে বিচরণ করিতে চায়,—তাহার সমক্ষে তখন বিশ্বের তাবৎ পদার্থই ঐহিক রীতিনীতির শৃঙ্খলা ভাঙ্গিয়া-চূরিয়া, পুরাতন সমস্ত চূর্ণ-বিচূর্ণ করিয়া এক অতি মনোরম নবীনতায় সাজিয়া আসিয়া দাঁড়ায়।

“যাদৃশী ভাবনা যস্য সিদ্ধি র্ভবতি তাদৃশী,”

এই কবি-বাক্যের তখন প্রকৃত সার্থকতা জন্মে। মহা-কবি মধুসূদন বীণাপাণির প্রেমে পাগল হইয়াছিলেন,— আপনার ইহকাল, পরকাল, সুখদুঃখ, সম্পদবিপদ, পুত্রকলত্র সমস্ত ভুলিয়া কবিতার সেবা করিয়াছিলেন, যথার্থই “ক্ষিপ্ত গ্রহের” ন্যায় দিগ্‌বিদিক জ্ঞানশূন্য হইয়া, কবিতাসুন্দরীর প্রেমে আকৃষ্ট হইয়া ছুটিয়াছিলেন,—