“বড়ই নিষ্ঠুর আমি ভাবি তারে মনে,
লো ভাষা, পীড়িতে তোমা গড়িল যে আগে,
মিত্রাক্ষর রূপ বেড়ি। কত ব্যথা লাগে,
পর যবে এ নিগড় কোমল চরণে—
স্মরিলে হৃদয় মোর জ্বলি উঠে রাগে।
... ... ... ... ...
চীন-নারী-সম পদ কেন লৌহ-ফাঁসে!”[১]
প্রেমে হউক, শোকে হউক, আদরে হউক, উপেক্ষায় হউক, মানুষ যখন পাগল-পারা হয়, তখন তাহার সকল বিষয়েই শৃঙ্খল ভাঙ্গিয়া যায়, সে তখন উদ্দাম ভাবে বিচরণ করিতে চায়,—তাহার সমক্ষে তখন বিশ্বের তাবৎ পদার্থই ঐহিক রীতিনীতির শৃঙ্খলা ভাঙ্গিয়া-চূরিয়া, পুরাতন সমস্ত চূর্ণ-বিচূর্ণ করিয়া এক অতি মনোরম নবীনতায় সাজিয়া আসিয়া দাঁড়ায়।
“যাদৃশী ভাবনা যস্য সিদ্ধি র্ভবতি তাদৃশী,”
এই কবি-বাক্যের তখন প্রকৃত সার্থকতা জন্মে। মহা-কবি মধুসূদন বীণাপাণির প্রেমে পাগল হইয়াছিলেন,— আপনার ইহকাল, পরকাল, সুখদুঃখ, সম্পদবিপদ, পুত্রকলত্র সমস্ত ভুলিয়া কবিতার সেবা করিয়াছিলেন, যথার্থই “ক্ষিপ্ত গ্রহের” ন্যায় দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হইয়া, কবিতাসুন্দরীর প্রেমে আকৃষ্ট হইয়া ছুটিয়াছিলেন,—