পাতা:জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯৩৬).pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
জাতীয় সাহিত্য

একাগ্র হৃদয়ে ধ্যানে বসিয়াছিলেন,—তাঁহার সাধনায় সিদ্ধি হইয়াছে। তাঁহার “অনন্য-পরতন্ত্রা” ভারতীকে মানস সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করিয়া, তিনি বলিয়াছিলেন,

“দুর্ম্মতি সে জন, যার মন নাহি মজে
কবিতা-অমৃত-রসে! হায়! সে দুর্ম্মতি,
পুষ্পাঞ্জলি দিয়া সদা যে জন না ভজে
ও চরণপদ্ম, পদ্ম-বাসিনি ভারতি!
কর পরিমলময় এ হিয়া-সরোজে—
তুষি যেন বিজ্ঞে, মাগো, এ মোর মিনতি।”[]

তাঁহার ‘মিনতি’ সফল হইয়াছে। শুধু ‘হিয়া’ নহে, ভারতীর করস্পর্শে তাঁহার দেহ-মন সমস্তই “পরিমলময়” হইয়াছিল, তাই তাঁহার সংস্পর্শে বঙ্গভাষা এবং বঙ্গভূমি চিরদিনের মত পরিমলময়ী হইয়া রহিয়াছে।

  বঙ্গভাষায় রাঙ্গা চরণে “মিত্রাক্ষর রূপ বেড়ি” দেখিয়া মধুসূদনের হৃদয়ে যে কি ব্যথা লাগিয়াছিল, তাহা উপরিধৃত কয় পঙ্‌ক্তি হইতেই বেশ বুঝা যায়। আমি যাঁহার সেবা করিয়া জীবন ধন্য করিব, যাঁহাকে মা বলিয়া প্রাণ শীতল করিব, কানন-প্রান্তর প্রতিধ্বনিত করিয়া যাঁহাকে ডাকিব—আমার সেই ডাকে সমগ্র গৌড়ভূমি চমকিয়া উঠিবে, আমার মাকে মা বলিয়া ডাকিবে—আমার এমন যে মা, এত সাধের, এত আদরের যে মা, তাঁহার চরণে শৃঙ্খল! পুত্র আমি,