আসিতে সে কুঞ্জবনে বেণু বাজাইয়া;
কিংবা মোরে লয়ে, দেব, দেহ তাঁর পদে।”[১]
এই অনুপম পঙ্ক্তিগুলি যখন পাঠ করি, তখন যথার্থই আত্মবিস্মৃত হই, কবির অপূর্ব সৃষ্টি-চাতুর্য্য-দর্শনে, ও শব্দ-গ্রন্থনের অনুপম কৌশলে একেবারে বিমোহিত হইয়া পড়ি। তখন
“তয়া কবিতয়া কিংবা তয়া বনিতয়াপি বা।
পাদবিন্যাসমাত্রেণ মনো নাপহৃতং যয়া॥”[২]
অলঙ্কারিকের এই উক্তির প্রকৃত অর্থবোধ হয়। এমন সুন্দর কবিতা, সুন্দর পদ-রচনা, সুন্দর ভাবাবেশ যে ভাষায় আছে, যে ভাষায় হইতে পারে, সেই ভাষা আমার মাতৃভাষা, সেই ভাষা আমার জন্মভূমির ভাষা, আমার বাঙ্গালার ভাষা—ইহা যখন ভাবি, তখন সত্যই একটা অপূর্ব্ব শ্লাঘা অনুভব করি। যখন
“এই দেখ্ ফুলমালা গাঁথিয়াছি আমি—
চিকণ গাঁথন!
দোলাইব শ্যাম-গলে, বাঁধিব বঁধুরে ছলে—
প্রেম-ফুল-ডোরে তারে করিব বন্ধন!
হ্যাদে, তোর পায়ে ধরি, কহু না, লো, সত্য করি,
আসিবে কি ব্রজে পুনঃ রাধা-বিনোদন?