পাতা:জাতীয় সাহিত্য - আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (১৯৩৬).pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

॥৴৹

ছিল। তাঁহার একান্ত অভিলাষ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেবায় আত্মোৎসর্গ করিয়া দেশের শিক্ষা-প্রণালীর উন্নতি-সাধন করিবেন। তাঁহার দেশের মেধাবী যুবকবৃন্দ যাহাতে নানা বিদ্যায় পারদর্শী হইয়া দেশের মুখোজ্জ্বল করিতে পারে, তাহার ব্যবস্থা করিতে হইবে, বঙ্গ ভাষা ও সাহিত্যকে গড়িয়া তুলিয়া তাহাকে গৌরবময় সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে,—ইহাই ছিল তাঁহার জীবনের লক্ষ্য।

 আশুতোষ বি. এল্. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া হাই কোর্টের উকীল হইলেন। ইহার পূর্ব্বে তিনি সার রাসবিহারী ঘোষের নিকট চুক্তিবদ্ধ (articled) সহকারী থাকিয়া আইনের প্রয়োগবিদ্যা শিক্ষা করিয়াছিলেন। মাত্র চল্লিশ বৎসর বয়সে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় হাই কোর্টের জজ নিযুক্ত হয়েন। আইন ব্যবসায়ে প্রভূত অর্থ উপার্জ্জন করিলেও তিনি জজিয়তী গ্রহণ করেন এই মানসে যে, ইহাতে তাঁহার যেটুকু অবসর থাকিবে, সেই অবসরসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেবায়, দেশের সেবায় নিয়োগ করিতে পারিবেন। ১৯০৪ হইতে ১৯২৩ সাল পর্য্যন্ত আশুতোষ জজের পদে নিযুক্ত ছিলেন। ইহার মধ্যে একবার তিনি চীফ্ জষ্টিসের পদে কার্য্য করিয়াছিলেন। জজ হিসাবে সর্ব্বত্র তাঁহার সুনাম ছিল এবং তিনি যে সমস্ত নজীর রাখিয়া গিয়াছেন তাহা আইনের পণ্ডিতেরও বিস্ময়ের কারণ। তাঁহার বিচারে সূক্ষ্মদর্শিতা, বিচক্ষণতা ও অধ্যবসায়ের প্রকৃষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। এই সকল কারণে, যে সকল মনস্বী হাই কোর্টের জজের পদ অলঙ্কৃত করিয়াছেন, তাঁহাদের মধ্যে আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের স্থান অতি উচ্চে।

 হাই কোর্টের জজের কঠোর দায়িত্বপূর্ণ, বহু শ্রমসাধ্য কর্ম্ম