পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপান-যাত্রী
৬৯

স্বর্গীয় শোভা, তা আমি এমন করে আর কোনদিন দেখতে পাই নি

 কাজের শক্তি, কাজের নৈপুণ্য এবং কাজের আনন্দকে এমন পুঞ্জীভূত ভাবে একত্র দেখতে পেয়ে, আমি মনে মনে বুঝতে পারলুম এই বৃহৎ জাতির মধ্যে কতখানি ক্ষমতা সমস্ত দেশ জুড়ে সঞ্চিত হচ্চে। এখানে মানুষ পূণপরিমাণে নিজেকে প্রয়োগ কর্‌বার জন্যে বহুকাল থেকে প্রস্তুত হচ্চে। যে-সাধনায় মানুষ আপনাকে আপনি ষোলো-আনা ব্যবহার কর্‌বার শক্তি পায়, তার কৃপণতা ঘুচে যায়, নিজেকে নিজে কোন অংশে ফাঁকি দেয় না,―সে যে মস্ত সাধনা। চীন সুদীর্ঘকাল সেই সাধনায় পূর্ণভাবে কাজ কর্‌তে শিখেচে, সেই কাজের মধ্যেই তার নিজের শক্তি উদারভাবে আপনার মুক্তি এবং আনন্দ পাচ্চে;― এ একটি পরিপূর্ণতার ছবি। চীনের এই শক্তি আছে বলেই আমেরিকা চীনকে ভয় করেচে―কাজের উদ্যমে চীনকে সে জিত্‌তে পারে না, গায়ের জোরে তাকে ঠেকিয়ে রাখ্‌তে চায়.

 এই এতবড় একটা শক্তি যখন আপনার আধুনিক কালের বাহনকে পাবে, অর্থাৎ যখন বিজ্ঞান তার আয়ত্ত হবে, তখন পৃথিবীতে তাকে বাধা দিতে পারে এমন কোন শক্তি আছে? তখন তার কর্ম্মের প্রতিভার সঙ্গে তার উপকরণের যোগসাধন হবে। এখন যে-সব জাতি পৃথিবীর সম্পদ ভোগ কর্‌চে, তারা চীনের সেই অভ্যুত্থানকে ভয় করে, সেই দিনকে তারা ঠেকিয়ে রাখ্‌তে চায়। কিন্তু যে জাতির যে দিকে যতখানি বড় হবার