মাক্সওয়েলের ভূত २२१ e মনে কর, তিনি গবাক্ষদ্বারে বসিয়া নিবিষ্টমনে বায়ুর অণুগুলির গতিবিধি পর্যালোচনা করিতেছেন ; যে অণু বিশ মাইলের অধিক বেগে গবাক্ষদ্বারে আসিয়া পৌছিতেছে, তাহাকে সসন্ত্রমে দ্বার খুলিয়া পাশের কুঠরিতে প্রবেশ করিতে দিতেছেন, আর যে অণুটা মন্দ গতিতে অর্থাৎ বিশ মাইলের কম বেগে আসিতেছে, তাহাকে তৎক্ষণাৎ “প্রবেশ নিষেধ” বলিয়া অৰ্দ্ধচন্দ্রসহকারে বিদায় দিতেছেন । কিয়ৎক্ষণ পরে কি দেখিবে ? পাশের ঘরে ক্রমাগত দ্রুতগামী অণুগুলি জমিতে থাকিবে ; তাহীদের সকলেরই বেগ বিশ মাইলের অধিক ; কাজেই গড়ে বেগ বিশ মাইলের অধিক হইবে। আর অন্ত গৃহে দ্রুতগামী অণুর সংখ্যা ক্রমেই কমিবে ও মন্দগতি অণুর সংখ্যা ক্রমেই বাড়িবে ; সেখানে অণুগুলির গড় বেগ ক্রমেই কমিয়া যাইবে । আবার বেগের বৃদ্ধির ফল বায়ুর উষ্ণতা বৃদ্ধি ; আর বেগের হ্রাসের ফল বায়ুর উষ্ণতার হ্রাস । কাজেই কিছুক্ষণ পরে দেখিবে, একটা কুঠরির বায়ু ক্রমেই শীতল হইতেছে ও অন্ত গৃহ ক্রমেই উষ্ণতর বায়ু দ্বারা পূর্ণ হইতেছে। দুটি ঘরের বায়ুর উষ্ণতা তফাত হইয়া গেল, অথচ পিশাচ মহাশয়কে শক্তি খরচ করিতে হইল না ; কেন না, তাহার ক্ষুদ্র অঙ্গুলির সঞ্চালনে ক্ষুদ্র গবাক্ষের ক্ষুদ্র কপাট খানির নাড়াচাড়ায় শক্তি ব্যয়ের অপেক্ষাই রাখে না । তাহার দেহখানি যেমন ইচ্ছা স্থল্ম মনে করতে পার । যে কপাটখানি তিনি নাড়িতেছেন, তাহাও যত ছোট হোক, তাতেও ক্ষতি নাই। অত ছোট কপাট খুলিতে বা বন্ধ করিতে আর শক্তি খরচ কোথায় ? কিন্তু ফলে হইল কি ? ছিল একটা ঘরে সর্বত্র সমান গরম খানিকট হাওয়া ; এখন পাওয়া গেল দুইটা ঘরের একটায় গরম হাওয়া, আর একটায় ঠাও। হাওয়া। এখন তুমি স্বচ্ছন্দে একটা এঞ্জিন যোগে উষ্ণ বায়ুর তাপ শীতল বায়ুতে চলিতে দিয়া সেই তাপের কিয়দংশ কাজে লাগাইতে পার। আমাদের যাহা অসাধ্য, ঐ ভূতের তাহ সাধ্য !
পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/২৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।