পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩০ জিজ্ঞাসা জানিবার উপায় নাই, জানিবার চেষ্টা বৃথা । কিন্তু ইহার মধ্যেও আবার একটু মতভেদ আছে । আগনষ্টিকদের মধ্যেও আবার সম্প্রদায়ভেদ আছে । হক্সল আগনষ্টিক নামটির স্বষ্টিকৰ্ত্ত । তিনি ঐ নামে আপনার পরিচয় দিতেন । লোকে স্পেন্সারকেও আগনষ্টিক বলিয়া জানে । কিন্তু প্রকৃত পক্ষে উভয়ে ঠিক একই রকম অজ্ঞেয়বাদী নহেন । স্পেন্‌সার বলেন জগতের খানিকটা অংশ, জগতের মূল রহস্ত, মূল তথা সম্বন্ধে কতকগুলি সংবাদ, আমাদের চিরকালই অজ্ঞেয় থাকিবে । হকৃঙ্গুলী কোন জাগতিক তথ্যকে একেবারে অজ্ঞেয় বলিতে সাহস করিতেন না ; তবে ইহা আমি সম্প্রতি জানি না, উহা আমি সম্প্রতি জানি না, বহুস্থলে এই মত প্রকাশ করিতেন । যে কোনও দুর্ভাগ্য জীব সেই সকল স্থলে জ্ঞানের স্পৰ্দ্ধা করিয়া তাহার সম্মুখে অগ্রসর হইয়াছে, তাহার সেই স্পৰ্দ্ধ হকুমূলীর প্রচণ্ড মুদ্রগরাঘাতে জীর্ণ পিষ্ট ও বিদীর্ণ হইয়া গিয়াছে। প্রকৃত পক্ষে স্পেনসারকে অজ্ঞেয়বাদী আর হক্স্লীকে অজ্ঞানবাদী বলা যাইতে পারে। ভ্রাস্তিবাদের ও অজ্ঞান বাদের মধ্যে প্রভেদ স্থাপন কঠিন কাজ । বৌদ্ধ ও বৈদাস্তিকের অবিদ্যাবাদকে ভ্রাস্তিবাদ বলা যাইতে পারে । জগৎ কি আমি জানি না, ইহা অজ্ঞানবাদ ; জগতের ষে জ্ঞান টুকু আছে, তাহ ভ্রাস্ত জ্ঞান বা মিথ্যা জ্ঞান, ইহা ভ্রাস্তিবাদ । এই দুই মতের মা ; কত টুকু প্রভেদ রহিয়াছে, তাহার বাদানুবাদে প্রবৃত্ত হইয়া বিসংবাদ বাধাইবার সম্প্রতি কোন প্রয়োজন নাই । ফলে উভয়ের মধ্যে কোনও সীমাজ্ঞাপক রেখা টানা কঠিন। প্রকৃত সংবাদ জানিনা বলিলেই বুঝায় যে সংবাদ জানি, তাহা মিথ্যা ; সুতরাং অবিদ্যাবাদেব ও ভ্রাস্তিবাদের প্রায় সমার্থকতাই আসিয়া পড়ে। সে যাই হউক, বৌদ্ধদৰ্শনের অবিদ্যা অর্থে ভ্রান্তি মনে করিলে গুরুতর দোষ ঘটিবে না ।