মুক্তি ২৮৫ অর্থে ব্যবহার করি। ইংরেজি creation শব্দে কখনও গঠন ব! নিৰ্ম্মাণ বুঝায়, কখনও অভিব্যক্ত করা বা মূর্ত্যন্তর দেওয়া বুঝায়, আবার কখনও বা অভাব হইতে ভাব পদার্থের উৎপাদন বুঝায় । কিন্তু বিষয়ী যে অর্থে বিষয়কে স্বষ্টি করে, আমি যে অর্থে আমার জগৎকে স্বষ্টি করিয়াছি, তাহ। ঐ রূপ creation বলিলে বুঝায় না । এই স্বষ্টি শব্দের অর্থ কি, তাহ ৮ উমেশচন্দ্র বটব্যাল তাহার সাংখ্যদর্শন পুস্তকে অতি স্বন্দর রূপে বুঝাইয়াছেন । এস্থলে তাহার ভাষা উদ্ধৃত করিবার প্রলোভন সংবরণ করিতে পারিলাম না। “স্বজ ধাতুর আদিম অর্থ বোধ হয় ত্যাগ বা নিক্ষেপ । এই ধাg হইতে বিসর্জন, সর্গ, বিস্বঃ, বিস্বষ্টি, স্বষ্টি ইত্যাদি শব্দ নিৰ্ম্মিত হইয়াছে । যে প্রক্রিয়া দ্বারা আত্মা আপনার জ্ঞান রাশিকে জ্ঞেয়ের উপর নিক্ষেপ করে, আপনা হইতে বহিষ্কৃত করিয়া তদ্বারা জ্ঞেয়কে আবৃত করে—অর্থাৎ আত্মা হইতে যেরূপে স্থলভূতের আবির্ভাব হয়—তাহার নাম দার্শনিক স্বষ্টি । যেমন গুটিপোকাতে রেশমের কোয় নিৰ্ম্মাণ করিয়া আপনাকে তন্মধ্যস্থ করে, তদ্রুপ নরনারী যে প্রক্রিয় দ্বারা নিজ নিজ সংসারের (ব্যক্তজগতের বা স্থলভূতসংঘের) তত্ত্ব দ্বারা আপনাকে আবৃত করে, দর্শনশাস্ত্রে তাহার নাম স্বষ্টি” ( সাংখ্যদর্শন ৩৬ পৃ: ) । আমরাও স্বষ্টি শব্দ ঠিক্ এই অর্থে ব্যবহার করিলাম। বটব্যাল মহাশয়ের সহিত আমাদের প্রভেদ এই যে তিনি সাংখ্যমত বুঝাইতেছেন ; আমরা বেদাস্ত মত বুঝাইতেছি । সাংখ্য বহু জীবের, বহু পুরুষের অস্তিত্ব স্বীকার করেন। বৈদাস্তিক এক জীবের, এক পুরুষের, এক আত্মার অস্তিত্ব মানেন । বটব্যাল মহাশয় যেখানে নিরনারী’ বলিয়াছেন, বেদান্তী সেখানে কেবল ‘জীব’ অথবা আত্মা’ শব্দ ব্যবহার করিবেন । অপিচ সংখ্য জ্ঞেয় নামক পদার্থের—একৃতির—স্বাধীন সভা স্বীকার করেন ; তবে এই জ্ঞের প্রকৃতি র্তাহার মতে প্রতীয়মান জগৎ নহে ; উহা কোন অনিৰ্ব্বাচ্য
পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/২৯৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।