সুখ না দুঃখ ? לפא হিন্দুর মোক্ষ, বৌদ্ধদিগের নির্বাণ, এই চিরন্তন ছঃখ হইতে মুক্তিলাভের আকাজক্ষার ফল । বৈদিক' আৰ্য্যগণের দুঃখবাদী হইবার বড় অবসর ছিল না। ইন্দ্রদেব, তুমি জল দাও, গরু দাও, স্বন্দরী স্ত্রী দাও, বলিয়া যাহারা হোমানলে সোমরস ঢালিতেন, তাহাদের জীবনের প্রতি একটা বিশেষ আসক্তি ছিল, তাহার সন্দেহ নাই । উপনিষদের জ্ঞানের আকাঙ্ক্ষার সহিত জীবনে অতৃপ্তি ও বিতৃষ্ণার আবির্ভাব দেখা যায় । বৌদ্ধধৰ্ম্মে তাহার পরিণতি । দুঃখপাশ হইতে জীবলোকের মুক্তি প্রদানের চেষ্টাই ভগবান বুদ্ধদেবের জীবন । তার পর হইতে হিন্দুশাস্ত্র নানা ভাবে সেই একই কথা বলিয়াছে ; মুক্তিলাভের নানা উপায় আলোচনা করিয়াছে ; যিনি যখন বুদ্ধদেবের পদাঙ্ক অনুসরণ করিয়া ধৰ্ম্মসংস্কারে হাত দিয়াছেন, তখনই তাহার মুখে সেই পুরাতন কথা ; ইচ্ছা নিরোধ কর, কৰ্ম্ম ভস্মসাৎ কর, মোক্ষ লাভ করিবে । আধুনিক হিন্দুর অস্থিমজ্জায় এই ভাব মিশান রহিয়াছে । - কবিগণের মধ্যে এ সম্বন্ধে মতের মিল দেখা যায় না ৷ হইতে পারে কাব্যে বাহা দেখি, তাহা কবির নিজ জীবনের অনুভবের প্রতিফলিত ছায়ামাত্র । কালিদাস যে কখনও সুগ ও সৌন্দর্য্য ছাড়া আর কিছু ভোগ করিয়াছিলেন, ৰোধ হয় না। ইন্দুমতীর মৃতদেহে শ্রমজলবিন্দু যাহার নজরে পড়ে, শোকমূচ্ছিন্তু রতিকে যিনি বহুধালিঙ্গনধুসরস্তনী দেখেন, তিনি যে মরণের দ্যায় প্রকাণ্ড ব্যাপারটাকে প্রকৃতিঃ শরীরিণাম বলিয়া ফুৎকারে উড়াইয়া দিয়া কেবল সৌন্দৰ্য্যদর্শনেই ব্যাপৃত থাকবেন, বিচিত্র নহে। - রামায়ণ মানবজীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ মহান দুঃখসঙ্গীত । তবে বৈরাগ্য অবলম্বন ইহার উপদেশ নহে । সংসারে দুঃথ আছে ; নিস্তারের উপায় নাই ; কিন্তু জীবনের কৰ্ত্তব্য সম্পাদন কর, সমাজের সেব কর ; বৈরাগী হইওনা । শেক্ষপীয়রের কল্পিত পরীরাজ্যের চঞ্চল স্ফক্তিমত্তা দেখিয়া ইংরাজের জাতীয় জীবনের নবোদগত
পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।