రిషి জিজ্ঞাসা প্রফুল ফুৰ্ত্তিমত্তা মনে পড়ে, যাহা এলিজাবেথের সময় হইতে আজ পর্যন্ত সমান টানে ফুটিয়া আসিতেছে । কিন্তু যেখানেই শেক্ষপীয়র জীবনের রহস্তাভেদের প্রয়াস পাইয়াছেন, সেখানেই প্রণয়ের নৈরাশু, ধৰ্ম্মের বিড়ম্বন ও জীবনের নিষ্ফলতায় উষ্ণ শ্বাস ফেলিয়াছেন । বন্ধু-শোকাৰ্ত্ত টেনিসন স্বষ্টিলীলায় প্রকৃতির উদ্দেশু ও অভিসন্ধির ঠাহর না পাইয়া হতাশ্বাস হইয়াছেন । বঙ্কিমচন্দ্রের ক্ষীণপ্রাণ অসহায় কুন্দনন্দিনীর মৃত দেহের সহিত জগৎ-সংসারের বিষবৃক্ষকেও দগ্ধ দেখিতে পারলে শান্তির আশা কখনও বা জন্মিতে পারে। বিজ্ঞানের নিকট ও আশার বাণী শুনা যায় না। প্রকৃতি নিষ্ঠুর ;– জাতীয় জীবনের শ্ৰীবৃদ্ধির জন্ত ব্যক্তির জীবন অহরহঃ উৎসর্গ করিতেছে। তোমার সম্মুখে সুখের পট ধরিয়া তাহারই আশায় তোমাকে নাচাইতেছে ও খাটাইতেছে ; কিন্তু তোমার বুদ্ধি প্রকৃতির উদ্দেশু নহে, জাতীয় বৃদ্ধিষ্ট তাহার উদ্দেশু। সেই উদেশুের জন্ত যখন খেয়াল হইবে, নিষ্ঠুর ভাবে তোমায় বলিদান দিবে ; তুমি যদি সুপুত্র হও, নিজের ভাবনা না ভাবিয়া প্রকৃতির কার্য্যে সহায়তা কর। আবার জাতীয় জীবনের বুদ্ধই যে প্রকৃতির উদ্দেশু, তাহাই বা কেমন করিয়া বলি । বিজ্ঞান মনুষ্যের জাতীয় জীবনেরও যে পরিণাম দেখাইয়াছে, তাহতে প্রকৃতির খেয়াল ভিন্ন কোন উদ্দেশু আছে, বুঝা যায় না, মোট কথা পুরস্কারের আশা নাই ; ভাল ছেলে হও ত বিহিত বিধানে জীবনের কাজ কর, বৈরাগী হই ও না ; প্রকৃতির এই উপদেশ মীমাংসা হইল না । নিরপেক্ষ ভাবে দুষ্ট্র দিক দেখাইতে গিয়া লেখক যদি অজ্ঞাতসারে কোন দিকে বেশী টান দিয়া থাকেন, পাঠকের মার্জনা করিবেন ।
পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/৪১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।