সৌন্দর্ষ্য-তত্ত্ব 8Y সমস্ত অনুভূতিগুলি এক রকমের হইলে তাহদের পরম্পরাকে চৈতন্য বলা যাইত কি না সন্দেহ । অনুভূতির মধ্যে পরস্পর যত পার্থক্য, বিচিত্রত বা বিশিষ্টতা, চৈতন্যও তত বিকশিত ও পরিস্ফুট । সুতরাং মানুষের চৈতন্য যে অস্তিত্ব যুক্ত, তাহার মূল কারণই এই যে, মানুষের অনুভূতিগুলা একরকম নহে । পঞ্চাশ রকম বিভিন্ন শব্দ-স্পৰ্শগন্ধের সমবায়ে জগতের যে দৃশু পট, তাহা ক্ষণে ক্ষণে বদলাইয়া নুতন শব্দ, নুতন স্পর্শ, নুতন গন্ধ সম্মখে আনিতেছে ; তাহাতেই চৈতন্তের ধারাবাহিক স্রোত এক টানে চলিয়াছে । চৈতন্তের অস্তিত্বের সঙ্গে অনুভব-বৈচিত্র্যের এরূপ সম্বন্ধ ; সুতরাং যেখানে চৈতন্য আছে, সেখানে এই বৈচিত্র্যও আছে । যেখানে বৈচিত্র্য পরিস্ফুট, চৈতন্তও সেখানে সমাক্ বিকশিত ; সেইখানেই রূপ ও সেইখানেই সৌন্দৰ্য্য ! যেখানে অনুভূতি নিত্য পরিবর্তনশীল, সেইপানেই চৈতন্ত স্ফৰ্ত্তিমান। আবার অনুভূতির আকস্মিক পরিবর্তন জীবনের পক্ষে শুভ নহে ; ধীরে ধীরে ক্রমে ক্রমে পরিবর্তন ঘটিলেই কল্যাণ ; নতুবা জীবনের শৃঙ্খল অনেক সময়ে ছিড়িয়া যায়। পরিবর্তনের ঘাতপ্রতিঘাতে জীবনের গ্রন্থি আলগা হইয় পড়ে । কাজেই আকস্মিক বা অতিমাত্র কিছুষ্ট ভাল লাগে ন । সুতরাং সৌন্দর্য্যের এক অঙ্গ অনুভূতির প্রবাহে আকস্মিকতার অভাব । আবার যাহার সন্ধুিত জীবনের স্থিতির ও পুষ্টির কোন রূপ সম্বন্ধ আছে, যাহা স্বাস্ত্যের অনুকুল, যাহাতে জীবন-সংগ্রামে আমাদের ভীতির ভাব কোন রূপে কমাইয়া দেয়, তাহারই প্রতি মন স্বভাবতঃ আকৃষ্ট হয় ; তাহাত দেখিতে ভাল লাগে ; যেমন সুগঠিত বলিষ্ঠ নরদেহ ; যেমন স্বাস্থশোভাসম্পন্ন আরক্ত যুবতীর গণ্ডদেশ ; যেমন দৃঢ়মূল ছায়াবিস্তারী মহীরুহ ; যেমন দৃঢ়ভিত্তি সৌষ্ঠবসম্পন্ন অট্টালিকা । সৌন্দর্য্যের তাঁর একট অঙ্গ সহানুভূতি । শুধু আমার চোখে যাহা ভাল লাগে, তাহা সুন্দর ; আবার যাহা আমার চোখে, তোমার চোখে,
পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।