૭૨ জিজ্ঞাসা অবয়বসমষ্টিকে শরীর বলা যায়। সেইরূপ দৃষ্টি শ্রুতি ভ্ৰাণ দেশ কাল ভয় ক্ষুধা তৃষ্ণ প্রভৃতি কতকগুলি বুদ্ধি ও অনুভূতি ও প্রতীতি জড়াইয়। যে সমষ্টি হয়, তাহাই আমি । ইহাদের পরস্পরের মধ্যে একটা এমন সম্বন্ধ ; দেখিতে পাই ; যাহতে একটার সহিত আর একটার মিল আছে, একটা হইতে আর একটা বাহির হইয়াছে, একটা তইতে আর একটা উৎপন্ন হইয়াছে, এইরূপ বলিয়া বোধ হয় । সাপ দেখিলাম, ভয় পাইলাম, পলায়নপর হইলাম, এস্থলে এই তিনটার কালগত সম্বন্ধ এইরূপ যে, দৃষ্টি হইতে ভীতি, ভীতি হইতে পলায়ন-চেষ্টার উৎপত্তি । বিশেষতঃ চৈতন্তের স্মৃতিসংজ্ঞাযুক্ত একটা অঙ্গ পঞ্চাশটা অনুভূতিকে এরূপ ঘনিষ্ঠ বন্ধনে জড়াইয়। রাখে যে, একটাকে ছাড়িয়া আর একটার উৎপত্তি হয় ন। । এইরূপ জ্ঞান ও অনুভূতির সম্বন্ধ বুঝি বলিয়াই, এইরূপ সম্বন্ধের বিষয়ে একটা জ্ঞান আছে বলিয়াই, সেই জ্ঞানের প্রবাহ ও অনুভূতির ধারার উল্লেখ করিতে পারিতেছি । ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জ্ঞানগুলি ও অনুভূতিগুলি সেই প্রবাহ মধ্যে এক একটি উৰ্ম্মিমাত্র বা কণিকামাত্র । সংহতি দ্বারা বা যোগাকর্ষণে আবদ্ধ বিন্দু বিন্দু জলকণা সমষ্টীকৃত করিয়া যেমন জলস্রোত, পরস্পর গাঢ় সম্বন্ধে গ্রথিত ও আবদ্ধ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চৈতন্তকণা সমষ্টীকৃত করিয়া তেমনই আত্মার প্রবাহ । এষ্টরূপেই আত্মার উৎপত্তি । ইহা ছাড়া অন্ত কোন অর্থে আত্মা থাকিতে পারে কি না, বিচার্য এই খানে একটা উৎকট প্রশ্ন উঠিবার সস্তাবনা। আ'ম, সৰ্ব্বদা ভাষায় সুখ আমার, দুঃখ আমাব, জ্ঞান আমার, স্মৃতি আমার, ইচ্ছা আমার ইত্যাদি বাক্য ব্যবহার করিয়া এমন একস কিছুর অস্তিত্ব স্বীকার করিয়া থাকি, যাহা মুখ, দুঃখ, জ্ঞান, ইচ্ছা হষ্টভে ভিন্ন ; অথচ জ্ঞান, ইচ্ছ, সুখ, দুঃখ, যাহার সম্পত্তিমাত্র। চলিত হিসাবে এষ্ট যে একটা কিছু, ইহারই নাম আত্মা । অর্থাৎ মনুষ্যের আত্মা বলিয়া যে পদার্থ আছে, সেই জ্ঞাত, সেই ইচ্ছাশালী, সেই ভোগী ; জ্ঞান, ইচ্ছ,
পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/৭১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।