আত্মার অবিনাশিত ৬৯ আছি, স্বীকার করিলাম । যাহা কিছু আছে, সমস্ত লইয়াই আমি । আমা ছাড়া কিছু নাই, কিছু থাকিতে পারে না । ইহা কিন্তু খাটি বেদান্ত । বৌদ্ধে ও বৈদাস্তিকে এইখানে গোড়ায় তফাত । বৌদ্ধ বলেন, কিছুই নাই ; জ্ঞান বুদ্ধি প্রতীতি, সুখ ও দুঃখ, সমস্তই কল্পনা ; আছে মনে করিতেছি মাত্র, কিন্তু এইরূপ মনে করিবার কোন হেতু নাই ; এইরূপ মনে করাই অবিদ্যা বা ভ্রান্তি । এই ভ্রাস্তি হইতে বিশ্বজগতের ও ংসারের উৎপত্তি ও আমার ও উৎপত্তি। ফলে, কি আছে ইহার উত্তর দিতে গেলে কিছুই নাই বলাই ভাল। যাহা আছে, তাহা শূন্ত । অতএব বৌদ্ধ বলিলেন—নাস্তি বৈদান্তিক বলিলেন, তা কেন হইবে ? যাহা দেখিতেছ, তাহাই আছে । নাস্তি নহে—তাস্তি । কে আছে ? আমি আছি । সেই আমি কে ? যাহা কিছু আছে, সমস্ত লইয়াই আমি । যাহা কিছু বাহিরে দেখিতেছ, যাহা কিছু ভিতরে দেখিতেছ, সবই আমার । যাহা পূৰ্ব্বে ছিল মনে কর, যাহা এখন আছে মনে কর, যাহা পরে হইবে বিবেচনা কর, সে সকল লইয়াক্ট আমি । চন্দ্র স্বৰ্য্য ছায়াপথ নীহারিক আমি বান্তিরে বিক্ষিপ্ত করিয়াছি ; যজ্ঞদন্ত দেবদত্ত রাম শু্যামকে আমি বাহিরে প্রেরণ করিয়াছি ; সুখদুঃখ শীতগ্রীষ্ম শোকতাপ আমি অস্তরে রাখিয়াছি । আমার কিয়দংশ অতীত, কিয়দংশ বৰ্ত্তমান, কিয়দংশ ভবিষ্যৎ । কেন ? এইরূপ করিয়! আমাকে বিক্ষিপ্ত, বিশ্লিষ্ট, ছিন্ন ভিন্ন করবার উদেখ কি ? প্রয়োজন কি ? উত্তর, ইহা আমার মায়া, আমার লীলাকৈবল্য । এইরূপ করি বলিয়াই আমি আছি । অন্ততঃ এইরূপ করাই আমার স্বভাব । যাহা আছে, যাহা ছিল, যাহা থাকিবে, সকলই লইয়া আমি ; অথব। আমার কিয়দংশকে আমি বৰ্ত্তমান দেখি, কিয়দংশকে অতীত দেখি, কিয়দংশকে ভবিষ্যৎ দেখি । কেন দেখি ? উহা আমার মায়, আমার স্বভাব, আমার লীলা । ঐরূপ না দেখিলে বোধ হয় আমাকে
পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।