তাতে পরিপূর্ণ বোধ হইত। অন্তিম ক্ষণ পর্যন্ত তাঁহার দর্শনশক্তি অব্যাহত ছিল। কেশ সকল শেষ বয়সে তুষারের ন্যায় শুভ্র হইয়াছিল। চরম দশাতে তাঁহার অত্যন্ত অসহ্য দৈহিক যাতনা ঘটে। কিন্তু তিনি স্বভাবসিদ্ধ সহিষ্ণুতা প্রভাবে তাহাতে নিতান্ত কাতর হয়েন নাই। অনন্তর ১৭২৭ খৃঃ অব্দের ২০এ মার্চ্চ চতুরশীতি বর্ষ বয়ঃক্রম কালে কলেবর পরিত্যাগ করিলেন।
নিউটনের চরিত্র সাধারণ লোকের চরিত্রের ন্যায় নহে। উহা এমন সুন্দর যে চরিতাখ্যায়ক ব্যক্তি লিখিতে লিখিতে পরম পরিতোষ প্রাপ্ত হন। এবং যে উপায়ে তিনি মনুষ্য মণ্ডলী মধ্যে অবিসংবাদিত প্রাধান্য প্রাপ্ত হইয়াছিলেন তাহা পর্য্যালোচনা করিলে মহোপকার ও মহার্থ লাভ হইতে পারে। নিউটন অত্যুৎকৃষ্ট বুদ্ধিশক্তি সম্পন্ন ছিলেন; কিন্তু তদপেক্ষায় স্থানবুদ্ধিরাও তদীয় জীবনবৃত্ত পাঠে পদে পদে উপদেশ লাভ করিতে পারেন। তিনি অলৌকিক বুদ্ধিশক্তি প্রভাবে গ্রহগণের গতি, ধূমকেতুদিগের কক্ষ, সমুদ্রের জলোচ্ছাস এই সকল বিষয়ের মীমাংসা করিয়াছেন। নিউটন আলোক ও বর্ণ এই উভয় পদার্থের স্বরূপ নির্ণয় করিয়াছেন। তাঁহার পুর্ব্বে এই বিষয় কোন ব্যক্তির মনেও উদয় হয় নাই। তিনি সাতিশয় পরিশ্রম ও দক্ষতা সহকারে অদ্ভুত বিশ্বরচনার যথার্থ তাৎপর্য্য ব্যাখ্যা করিয়াছেন; আর তাঁহার সমুদায় গবেষণা দ্বারাই সৃষ্টিকর্ত্তার মহিমা, প্রজ্ঞা, ও অনুকম্পা প্রকাশ পাইয়াছে।