পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তোমাকে মাঠের ভিডে গাছের ফঁাকে দিনের রৌদ্র অষ্ট ; কুলবধূর বহিরাশ্রয়িতার মতন অনেক উডে হিজল গাছে জামের বনে হলুদপাখির মতো রূপসাগরের পর থেকে কি পাখনা বাড়িয়ে বাস্তবিকই রৌদ্র এখন ? সত্যিকারের পাখি ? কে যে কোথায় কার হৃদয়ে কখন অপঘাত করে । রৌদ্রবরণ দেখেছিলাম কঠিন সময়-পরিক্রমার পথে— নারীর,—তবু ভেবেছিলাম বহিঃপ্রকৃতির। আজকে সে-সব মানকেতনের সাড়ার মতো, তবু অন্ধকারের মহাসনতনেব থেকে চেয়ে অণশ্বিনের এই শীত স্বাভাবিক ভোরের বেলা হ’লে বলে ; আমি রোদ কি ধুলো পাখি না সেই নারী ? পাতা পাথর মৃত্যু কাজের ভূকন্দরের থেকে আমি শুনি ; নদী শিশির পাখি বাতাস কথা বলে ফুরিয়ে গেলে পরে শান্ত পরিচ্ছন্নতা এক এই পৃথিবীর প্রাণে সফল হতে গিয়েও তবু বিষন্নতার মতো । যদিও পথ আছে—তবু কোলাহলে শূন্য আলিঙ্গনে নায়ক সাধক রাষ্ট্র সমাজ ক্লান্ত হয়ে পড়ে ; প্রতিটি প্রাণ অন্ধকারে নিজের আত্মবোধের দ্বীপের মতো— কী এক বিরাট অবক্ষয়ের মানব-সাগরে । তবুও তোমায় জেনেছি, নারি, ইতিহাসের শেষে এসে ; মানবপ্রতিভার রূঢ়তা ও নিষ্ফলতার অধম অন্ধকারে মানবকে নয়, নারি, শুধু তোমাকে ভালোবেসে বুঝেছি নিখিল বিষ কী রকম মধুর হতে পারে। ১৩৬