পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হয়তো ভোরে আমরা সবাই মানুষ ছিলাম, তারি নিদর্শনের সূর্যবলয় আজকের এই অন্ধ জগতে । চারিদিকে অলীক সাগর—জাসন ওডিসিয়ুস ফিনিশিয় সার্থবাহের অধীর আলো,—ধর্মীশোকের নিজের তো নয়, আপতিতকাল আমরা আজো বহন করে, সকল কঠিন সমুদ্রে প্রবাল লুটে তোমার চোখের বিষাদ ভংসনা...প্রেম নিভিয়ে দিলাম, প্রিয় । অন্ধকার থেকে গাঢ় অন্ধকা ব থেকে আমরা এ-পৃথিবীর আজকের মুহূর্তে এসেছি । বীজের ভেতর থেকে কী ক’রে অরণ্য জন্ম নেয়,— জলের কণার থেকে জেগে ওঠে নভোনীল মহান সাগর, কী ক’রে এ-প্রকৃতিতে— পুথিবীতে, আহা, ছায়াচ্ছন্ন দৃষ্টি নিয়ে মানব প্রথম এসেছিল, আমরা জেনেছি সব,--অনুভব করেছি সকলই । সূর্য জ্বলে,- কল্পোলে সাগর জল কোথাও দিগন্তে আছে, তাই শুভ্ৰ আপলক সব শঙ্খের মতন আমাদের শরীরের সিন্ধু-তীর । এই সব ব্যাপ্ত অনুভব থেকে মানুষের স্মরণীয় মন জেগে ব্যথা বাধা ভয় রক্তফেনশীর্ষ ঘিরে প্রাণে সঞ্চারিত ক’রে গেছে অাশা অণর আশা ; সকল অজ্ঞান কবে জ্ঞান আলো হবে, সকল লোভের চেয়ে সৎ হবে না কি সব মানুষের তরে সব মানুষের ভালোবাসা । আমরা অনেক যুগ ইতিহাসে সচকিত চোখ মেলে থেকে দেখেছি আসন্ন সূর্য আপনাকে বলয়িত ক’রে নিতে জানে নব নব মৃত সূর্যে শীতে ; দেখেছি নিঝরি নদী বালিয়াড়ি মরুর উঠানে মরণের ই নামরূপ অবিরল কী যে | ՏԳ8