পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছায় পাখি, একদিন কালীদছে ছিলেন। কি—দহের ৰাতানে হায় পাখি একদিন কালীদহে ছিলে না কি—দহের বাতাসে আষাঢ়ের দু'পহরে কলরব করন কি এই বাংলায় । আজ সারাদিন এই বাদলের কোলাহলে মেঘের ছায়ায় চাঁদ সদাগর ঃ তার মধ,কর ডিঙাটির কথা মনে আসে, কালীদহে কবে তারা পড়েছিলো একদিন ঝড়ের আকাশে,— সেদিনো অসংখ্য পাখি উড়েছিলো না কি কালো বাতাসের গার, অাজ সারাদিন এই বাদলের জলে ধলেশবরীয় চড়ায় গাংশালিখের ঝাঁক, মনে হয়, যেন সেই কালীদহে ভাসে ঃ এইসব পাখিগুলো কিছুতেই আজিকার নয় যেন—নয়— এ নদীও ধলেশ্বরী নয় যেন—এ আকাশ নয় আজিকার ঃ ফণীমনসার বনে মনসা রয়েছে না কি ?—অাছে ; মনে হয়, এ নদী কি কালীদহ নয় ? আহা, ঐ ঘাটে এলানো খে*াপার সনকার মুখ আমি দেখি না কি ? বিষয় মলিন ক্লান্ত কি যে সত্য সব ;—তোমার এ স্বপ্ন সত্য, মনসা বলিয়া গেল নিজে । জীৱন অথবা মৃতু্য চোখে র’ৰে—আর এই বাংলার ঘাস জীবন অথবা মৃত্যু চোখে র’বে—আর এই বাংলার ঘাস র’বে বসুকে ; এই ঘাস ঃ সীতারাম রাজারাম রামনাথ রায় ইহাদের ঘোড়া আজো অন্ধকারে এই ঘাস ভেঙে চ’লে যায়— এই ঘাস ঃ এরি নিচে কণ্ডকাবতী শওখমালা করিতেছে বাস ঃ তাদের দেহের গন্ধ, চাঁপাফুল মাখা মান চুলের বিন্যাস ঘাস আজো ঢেকে আছে ; যখন হেমন্ত আসে গৌড় বাংলায় কাতিকের অপরাহ্নে হিজলের পাতা শাদা উঠানের গায় ঝ’রে পড়ে, পুকুরের ক্লান্ত জল ছেড়ে দিয়ে চলে যায় হাঁস, আমি এ ঘাসের বসুকে শ-য়ে থাকি—শালিখ নিয়েছে নিঙড়ায়ে নরম হলদে পায়ে এই ঘাস ; এ সবুজ ঘাসের ভিতরে সে*াদা ধুলো শয়ে আছে—কাঁচের মতন পাখা এ ঘাসের গায়ে ভেরেন্ডাফুলের নীল ভোমরারা বলোতেছে—সাদা স্তন ঝরে করবীর ৪ কোন এক কিশোরী এসে ছি'ড়ে নিয়ে চ’লে গেছে ফুল, তাই দুধ ঝরিতেছে করবীর ঘাসে ঘাসে ঃ নরম ব্যাকুল । যেদিন সরিয়া যাৰ তোমাদের কাছ থেকে—দুর কুয়াশায় যেদিন সরিয়া যাব তোমাদের কাছ থেকে—দরে কুরাশায় চলে যাব, সেদিন মরণ এসে অন্ধকারে আমার শরীর ভিক্ষা ক’রে লয়ে যাবে ;—সেদিন দ'দন্ড এই বাংলার তীর— | 88