পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আৰাৱ আসিৰ ফিরে থালসিড়িটির তীরে—এই বাংলায় জাবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে—এই বাংলায় হয়তো মান্য নয়—হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে ; হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কাতিকের নবামের দেশে কুয়াশার বদকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছারায় ; হয়তো বা হাঁস হ’বো –কিশোরীর—ঘঙের রহিবে লাল পায়, সারা দিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধ ভরা জলে ভেসে ভেসে ; আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলার এ সবুজ করণে ডাঙায় ; হয়তো দেখিবে চেয়ে সমৃদশন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে ; হয়তো শুনিবে এক লক্ষীপেচা ডাকিতেছে শিমলের ডালে ; হয়তো খইয়ের ধান ছড়াতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে ; রংপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক শাদা ছোঁড়া পালে ডিঙা বায়,—রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে দেখিবে ধবল বক ; আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে— যদি আমি ঝ’রে যাই একদিন কার্তিকের নীল কুয়াশায় যদি আমি ঝরে যাই একদিন কাতিকের নীল কুয়াশায় যখন ঝরিছে ধান বাংলার ক্ষেতে-ক্ষেতে মান চোখ বুজে, যখন চড়াই পাখি কাঁঠালীচাঁপার নীড়ে ঠোঁট আছে গজে, যখন হলুদ পাতা মিশিতেছে উঠানের খয়েরী পাতায়, যখন পুকুরে হসি সোঁদা জলে শিশিরের গন্ধ শুধ পায়, শামকে গুগলিগুলো পড়ে আছে শ্যাওলার মলিন সবুজে,— তখন আমারে যদি পাও নাকো লালশাক-ছাওয়া মাঠে খুজে, ঠেস দিয়ে ব’সে আর থাকি নাকো বুনো চালতার গায়, তাহলে জানিও তুমি আসিয়াছে অন্ধকারে মৃত্যুর আহবান— যার ডাক শুনে রাঙা রৌদ্রেরো চিল আর শালিখের ভিড় একদিন ছেড়ে যাবে আম জাম বনে নীল বাংলার তীর, যার ডাক শুনে আজ ক্ষেতে ক্ষেতে ঝরিতেছে খই আর মৌরির ধান - কবে যে আসিবে মৃত্যু ঃ বাসমতী চালে-ভেজা শাদা হাতখান রাখো বসুকে, হে কিশোরী, গোরোচনারপে আমি করিব যে স্নান— মনে হয় একদিন আকাশের শুকতারা দেখিব না আর মনে হয় একদিন আকাশের শুকতারা দেখিব না আর ; দেখিব না হেলেঞ্চার ঝোপ থেকে এক ঝাড় জোনাকি কথন নিভে যায় ;–দেখিব না আর আমি পরিচিত এই বাঁশবন, SBS