পাতা:জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা.djvu/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পুনরুদ্‌যাপনের মতন আরেকবার এই
তেরোশো পঞ্চাশ সাল থেকে শুরু ক’রে ঢের দিন
আমারো হৃদয় এই সব কথা ভেবে
সৃষ্টির উৎস আর উৎসারিত মানুষকে তবু
ধন্যবাদ দিয়ে যায়।
কেননা সৃষ্টির নিহিত ছলনা ছেলে-ভুলোবার মতো তবু নয়;
মানুষও ঘুমের আগে কথা ভেবে সব সমাধান
ক’রে নিতে চায়;
কথা ভেবে হৃদয় শুকায় জেনে কাজ করে।

সময় এখনো শাদা জলের বদলে বোনভায়ের
নিয়ত বিপন্ন রক্ত রোজ
মানুষকে দিয়ে যায়;
ফসলের পরিবর্তে মানুষের শরীরে মানুষ
গোলাবাড়ি উঁচু ক’রে রেখে নিয়তির
অন্ধকারে অমানব;
তবুও গ্লানির মতো মানুষের মনের ভিতরে
এই সব জেগে থাকে ব’লে
শতকের আয়ু— আধো আয়ু— আজ ফুরিয়ে গেলেও এই শতাব্দীকে তা’রা
কঠিন নিস্পৃহভাবে আলোচন ক’রে
আশায় উজ্জ্বল রাখে; না হ’লে এ ছাড়া
কোথাও অন্য কোনো প্রীতি নেই।
মানুষের মৃত্যু হ’লে তবুও মানব
থেকে যায়; অতীতের থেকে উঠে আজকের মানুষের কাছে
আরো ভালো— আরো স্থির দিকনির্ণয়ের মতো চেতনার
পরিমাপে নিয়ন্ত্রিত কাজ
কতো দূর অগ্রসর হ’য়ে গেল জেনে নিতে আসে।

১২৮