মাঠের নিস্তেজ রোদে নাচ হবে—
শুরু হবে হেমন্তের নরম উৎসব।
হাতে হাত ধ’রে-ধ’রে গোল হ’য়ে ঘুরে-ঘুরে-ঘুরে
কার্তিকের মিঠে রোদে আমাদের মুখ যাবে পুড়ে;
ফলন্ত ধানের গন্ধে—রঙে তার—স্বাদে তার ভ’রে যাবে আমাদের সকলের দেহ;
রাগ কেহ করিবে না—আমাদের দেখে হিংসা করিবে না কেহ।
আমাদের অবসর বেশি নয়—ভালোবাসা আহ্লাদের অলস সময়
আমাদের সকলের আগে শেষ হয়;
দূরের নদীর মতো সুর তুলে অন্য এক ঘ্রাণ–অবসাদ–
আমাদের ডেকে লয়, তুলে লয় আমাদের ক্লান্ত মাথা, অবসন্ন হাত।
তখন শস্যের গন্ধ ফুরাযে গিয়েছে খেতে—রোদ গেছে প’ড়ে,
এসেছে বিকালবেলা তার শান্ত শাদা পথ ধ’রে;
তখন গিয়েছে থেমে ওই কুঁড়ে গেঁয়োদের মাঠের রগড়;
হেমন্ত বিয়ায়ে গেছে শেষ ঝরা মেয়ে তার শাদা মরা শেফালীর বিছানার ’পর;
মদের ফোঁটার শেষ হ’য়ে গেছে এ-মাঠের মাটির ভিতর,
তখন সবুজ ঘাস হ’য়ে গেছে শাদা সব, হ’যে গেছে আকাশ ধবল,
চ'লে গেছে পাড়াগাঁর আইবুড়ো মেয়েদেব দল।
২
পুরোনো পেঁচারা সব কোটরের থেকে
এসেছে বাহির হ’য়ে অন্ধকার দেখে
মাঠের মুখের ’পরে;
সবুজ ধানের নিচে—মাটির ভিতরে
ইঁদুরেরা চ’লে গেছে; আঁটির ভিতর থেকে চ’লে গেছে চাষা;
শস্যের খেতের পাশে আজ রাতে আমাদের জেগেছে পিপাসা।
ফলন্ত মাঠের ’পরে আমরা খুঁজি না আজ মরণের স্থান,
প্রেম আর পিপাসার গান
২৭