পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“লক্ষী পেঁচা ?” ‘হঁ্যা ।” ‘কোথায় ? ” —“বোধ করি জাম গাছটায় ।” জানালার ভিতর দিয়ে একবার তাকিয়ে শুধু—“বেশ সুন্দর জোৎস্না, না ?” —“আজি সন্ধের সময় বৃষ্টি হয়েছিল বুঝি ? তেলাকুচোর জঙ্গল— অাম কাঠালের ডালপালা সব কেমন ভিজে-ভিজে না ? এই চাবিটা নাও তো ।” —“কেন ?” ‘দেরাজের ভেতর অামার জৰ্দার কোঁটোটা অাছে—এনে দাও না লক্ষ্মীটি । ‘দেরাজে চাবি লাগাবার দরকার হল ?” বিয়ের সময় জেঠামশায় যে হারটা দিয়েছিলেন সেইটে রয়েছে কি না ।” ‘কত দাম হবে ? পঞ্চাশ ?” —“কী জানি—হার তো অামি বিক্রি করব না ।” —‘অামি যদি করি ?” ‘কই কোঁটো অানলে ?” —“কোঁটোর ভিতর অাছে কিছু ?” ‘না-থাকবারই তো কথা । । জৰ্দা নেই-নেই করে দু-তিন দিন জৰ্দা খেতে পারছি না। ।” দেরাজ খুলে কোঁটো এনে অঞ্জলিকে দিলাম । খুলতে-খুলতে—“না। যদি থাকে কিছু – তা হলে বাবার কাছ থেকে পয়সা নিয়ে চার পয়সার জাৰ্দা কিনে এনে দিতে পারবে অামাকে ?” ‘এত রাতে ? বাবা জিজ্ঞেস করবেন, কেন, পয়সা কিসের জন্য ? —“তাও জিজ্ঞেস করবেন বুকি ?” —“সত্তর টাকা ত মোটে মাইনে—এত বড় সংসার চালাতে হচ্ছে অঞ্জলি একটু থেমে —“যাক পেয়ে গেছি—এই নাও—এইটেই খুঁজছিলাম ।” একটা দোয়ানি সে আমার হাতে তুলে দিল । দোয়ানিটা নিকেলের নয়—রুপোর । —“যাও, তুমি চট করে চার পয়সার কিনে এনে দিয়ে ঘুমোও গে—”