পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পা লি য়ে যে তে মাদ্রাজ থেকে প্রায় তিন-চার বছর পর কলকাতায় ফিরলাম। ব্যবসার প্রথম বছরে হাজার পনেরো টাকা লাভ হয়েছিল; পরের বছরে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা নষ্ট হয়ে গেল। তারপর থেকে ক্রমাগত লোকসান; দেনা শোধ দিতে দিতে দেখা গেল কলকাতায় যাবার টিকিট কিনবার পয়সা পর্যন্ত হাতে থাকে না। কাজেই নরসিং চেট্রির কাছ থেকে পঞ্চাশ টাকা ধার করে কলকাতায় এলাম। আমার ব্যবসার যখন সুদিন ছিল তখন চেটি রোজই আমার ফ্ল্যাটে এসে ডিনার খেত, দামি-দামি জাভা চুরুটগুলো পকেটে ভরে নিয়ে যাওয়া ছিল তার অভ্যাস। এই সবের জন্য কোনোদিন বিল দেই নি আমি তাকে, দিলে কোনো দেড় হাজার দু'হাজারে না দাড়াত? অবিশ্যি চেটি অন্য দিক দিয়ে আমাকে ঢের সাহায্য করেছিল; ব্যবসার সুপরামর্শ তার কাছ থেকে ঢের পেয়েছিলাম। নিজের শরীর খাটিয়ে এক-এক সময় সে ঢের উপকার করেছে আমার। তামিল, তেলেগু লিখতে খুব সাহায্য করেছে আমাকে; মাদ্রাজে অবিশ্যি ইংরেজিতেই অনেক দূর চলে। চেটিকে বলে এসেছি, ছ-সাত মাসের মধ্যেই মাদ্রাজ ফিরব আবার। চেটি বলেছে—না ফিরলেও বাকি এই পঞ্চাশ টাকাকে ধার বলে মনে কোরো না। দেখ, কলকাতার ব্যবসা করতে পার কি না। কিংবা চাকরি পেলে ঢের ভালো হয়। বাস্তবিক, মাদ্রাজি বডড চালাক জাত। কী হবে না-হবে ধূর্ত নারদের মতো তা ধরে ফেলে। . আমার যে আর মাদ্রাজ যাওয়া হবে না, ব্যবসাও করা হবে না হয়তো, পঞ্চাশটা টাকা তার কিছুতেই শোধ দিতে পারব না যে, চাকরিই যে আমার খোজা উচিত, আমার চেয়েও কে তা ঢের ভালো করে জানে ? কলকাতায় এসে হাতে কুড়ি-পাঁচশ টাকা রইল শুধু মাদ্রাজে এ তিন বছর বেশ আদব-কায়দায় থাকার অভ্যাস করে ফেলেছিলাম; সমস্ত দিন ফিটফাট সুট পরে S8 S