পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘কেন ?? ‘ভক্তি হচ্ছে না খেতে’ কিসের জন্য কল্যাণী ? দোকানের দুধ বলে? দাও আমি খেয়ে ফেলি’ হাত বাড়াতেই দুধের গ্লাশটা সরিয়ে নিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে কল্যাণী, মিনমিন করে হেসে ইস্ দোকানের জিনিশ আমি খাই না বুঝি? আমার দিকে তাকিয়ে কল্যাণী একটু লজ্জিত হয়ে—ছি, খেতে চেয়েছিলে—বাধা দিলাম, এই নাও— ফিরে চেয়ে দেখলাম সে দুধের দিকে সতৃষ্ণ ভাবে তাকিয়ে আমার দিকে গ্লাশ এগিয়ে দিচ্ছে, হাতভরা তার অনিচ্ছা ও অনগ্রসরের অসাড়তা; মুখখানা হেমন্তের সন্ধ্যার মতো হিম, বেদনাতুর; মৃত সন্তানের মুখের উপর নিবদ্ধ মৃত্যুবৎসা হরিণীর মতো বিহবল বিষগ্ন চোখ। উটের লোম দিয়ে যে-ব্রাশ তৈরি হয়, যার সঙ্গে রং মাখিয়ে মানুষ ছবি আঁকে, সেই ব্রাশই-বা কোথায়? রংই-বা কোথায়? ছবি আঁকবার শক্তিই-বা কোথায় ? রিংতুলি নিয়ে একবার যে ছবি এঁকেছিল আজ এই কল্যাণীর ছবি একে যাক— না, খাও’ ‘কে ? আমি খাব ?” আমার স্বরের ভিতর তৃষ্ণা ও আগ্রহের পরিচয় পেয়ে গ্লাশটা সে নিজের দিকে সরিয়ে নিল— দুধ কিন্তু ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে, কল্যাণী’ ‘বেশ, গরম করে নিয়ে এলেই হবে ? ‘কে গরম করবে ? ‘আমিই করে আনব? তারপর খাবে কে ?” ‘কেন ? তুমি খেতে চাও নাকি? একটা বই তুলে নিয়ে, একটু দূরে সরে যেতেই কল্যাণী গ্লাশটা নিয়ে আমার কাছে এগিয়ে এল। দাও” আচ্ছা, একটু গরম করে নিয়ে আসি’ আনো’ 'তা, এই বেশ গরম আছে? ‘তবে এই-ই দাও।” একটু চিনি মিশিয়ে দেব? তা দিতে পারো । চিনি হয়তো ওরা দিয়ে দিয়েছে তা দিয়ে থাকবে? "খাবে ?” দিলেই খাই কেন ? তুমি কি মনে কর একটু দুধের ব্যাপার নিয়ে তোমাকে বঞ্চনা করব ? لا لا