পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৫ পৃষ্ঠাটি শাদা। ৪৭ পৃষ্ঠার মাথায় II Left alone লিখে এই লেখাটি শুরু। এই প্রথম পৃষ্ঠার শেষের দিকে একটি জায়গায় সংযোজন করেছেন ৪৬ পৃষ্ঠার মাথায়। ১০৮ পৃষ্ঠা পর্যন্ত টানা লেখা। মাঝখানে ৫২ ও ৫৩ পৃষ্ঠা দুটি শাদা। মনে হয় ৫১ পৃষ্ঠার পর পাতা উল্টানোর সময় বাদ পড়ে যায়। খাতার এই দ্বিতীয় রচনাটি, ‘নিরুপম যাত্রা’। সেকালে পরীক্ষার খাতা দেখা হত বা অ্যাকাউন্টেন্সির কাজে লাগত যে-ধরণের খুব মোটা শিসের লাল নীল পেন্সিল—তেমনি কোনো পেন্সিলে, লালে, জীবনানন্দ এই রচনাটি বহু জায়গায় সংশোধন করেছেন, সংযোজন করেছেন তার চাইতেও বেশি। এই মোটা শিসের পেন্সিলে দাগ দেয়া যত সহজ, লেখা তত সহজ নয়। ফলে, লেখার হরফগুলো, যখন তিনি এই পেন্সিল ব্যবহার করেছেন, অপরিচিত হয়ে উঠেছে। তাছাড়া সংযোজনের সময় তিনি হয়তো শুরুর সংকেতটা ঠিকই দিয়ে রেখেছেন কিন্তু তারপর লাল পেন্সিলের সংযোজন লিখে গেছেন ইতিপূর্বেই লিখে ফেলা লাইনের যাকে-ফাকে, মার্জিনের ওপরে। ফলে এই খাতায় এমন কিছু পাতা আছে যেখানে একটি পাতায় দুটি পাণ্ডুলিপি লুকানো—একটি প্রথমবারের লেখা, আর-একটি দু-এক পাতা। আগে থেকে শুরু কোনো সংযোজনের সঙ্গে যুক্ত। একটি আগেকার দিনের ব্লু-ব্ল্যাক কালিতে পেনে লেখা। আর-একটি ওই লাল পেন্সিলে। ফলে সাধারণভাবেই দুষ্পাঠ্য জীবনানন্দীয় পাণ্ডুলিপির ভিতরেও আবার এই রচনাটি একটু বিচিত্র ধরণের জটিল, পাঠ্যতায় নতুন ধরণের বাধা। কিন্তু জীবনানন্দের রচনায় অসম্পূর্ণ বাক্য, ভুল শব্দ—এই ধরণের অনিশ্চয়তা প্রায় থাকে না বললেই চলে, তাই একবার ভিতরে ঢুকে গেলে দুই রঙের পাঠকে নিশ্চিত ভাবেই আলাদা করে ফেলা যায়। জীবনানন্দের পাণ্ডুলিপি-অভ্যাসের মতো এই পাণ্ডুলিপিতেও বিকল্প লেখা আছে কিন্তু কোনোটিই কাটা নেই, কোথাও দাগ দেয়া আছে—সংশোধনের বা বর্জনের সঙ্কেত হিশেবে। সেই কিছু ক্ষেত্রে আমাদেরই বাছতে হয়েছে ও স্থির করতে হয়েছে কোনটি গ্রহণীয়। জীবনানন্দ তার চরিত্রদের পূর্ণনাম মাত্র প্রথমবারই ব্যবহার করেন। তারপর তাদের ইংরেজি আদ্যক্ষর। আমরা তাদের བཱ་ཀྱཱ་ཟ ཨ་བལ༢ ཝ་ཤཁ། རྫོང་ར་ལ་ཝ་ཤ་ཝ Ba སྡོད་ལྟ་བ། ཐ་མལ་ ཨང་༢། ཨཁ་ག གང་ཀ ཝ་ཝ | এই রচনাটিতে সংশোধনের চাইতে সংযোজন বেশি। সংযোজনের ধরণ দেখলে বোঝা যায়, পরবর্তী পাঠে এক-একটি জায়গাকে তিনি সম্প্রসারিত করে দিয়েছেন কিছু-কিছু করে। সেই সম্প্রসারণগুলোর ভাষাতেই বোঝা যায় রচনাটির ভিতরে তার পুনপ্রবেশের ফলেই সম্প্রসারণগুলো হয়ে উঠেছে তীব্র, অর্থদ্যুতিবান, আবার কখনো বিষয়বিস্তারে সূক্ষ্মতর। পাঠক, সংযোজনের ধরণের ইঙ্গিত পাবেন—বর্তমান ছাপায় দ্বিতীয়বার যেখানে র্যাক দেয়া হয়েছে তার পরের অংশে (চুরুট নিবে গেল বুঝি?’)—‘দিঘির পাড়ের অশ্বখের সবচেয়ে মোটা ডালগুলো তখনো জন্মায় নি”—এই পুরো প্যারা থেকে। তেমনি, উপন্যাসের একেবারে শেষ প্যারাটি বা তার একটু আগে ‘সন্ধ্যার মুখোমুখি জ্বর এল আবার’ এই অংশের পরবর্তী জুরাক্রাস্ত চিত্তাভাবনা থেকেও। এই অংশগুলি পরবর্তী সংযোজন—প্রথম খশড়ার লেখা নয়। এ উপন্যাসে জীবনানন্দের বাস্তবতা-অন্বেষণ তথ্যনিষ্ঠ। তাই একটু যেন হতচকিত হয়ে যেতে হয় আমাদের ত্রিশের দশকে গোড়ার দিকে দুনিয়াব্যাপী মন্দার আঘাত জর্জর এই উপনিবেশের এক রাজধানীতে বেকার এক শিক্ষিত যুবকের দৈনন্দিন অস্তিত্বের এই বৃত্তত্তে। জীবিকা ও জীবনধারণের উপায় খোঁজার তাড়ায় এই উপন্যাসে কলকাতা ও কলকাতার বাইরের সারাটা বাংলা যেন দুই মহাদেশ। এই মহাদেশের মধ্যবর্তী ব্যবধানটি উপন্যাসের প্রথমে মনে হয় দুস্তর, আর, শেষে মনে হয় চিরন্তন। সেই কঠিন বাচার মধ্যে কলকাতার বিপ্রতীপে 'রাপসী বাংলা’-র অনুষঙ্গ আসে অস্তিত্বমথিত এক বাস্তব হিশেবে—সে বাস্তবে কল্পনাটিই বাস্তব। জীবনানন্দের এ উপন্যাসের নায়ক তিরিশের দশকের গোড়ার সেই আশিরনখর বাঙালি যুবকটি—আমাদের উপন্যাস-সাহিত্যে যে খুব একটা প্রামাণিক হয়ে ওঠে নি। এই উপন্যাসে প্রায় একমাত্র চরিত্র প্রভাত, তিরিশের দশকের যুবক বাঙালির নাগরিক অস্তিত্বকে প্রামাণিকতা দিল । S b" S