পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কপালে একটা বোনা দিয়ে অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে যখন-তখন কাদেন না।’ একটু চুপ থেকে—আমাকে নিয়ে রাজপ্রাসাদে থাকলেও অন্ধকারে নিজের কোঠায় ঢুকে দরজা বন্ধ করে কাদতে? তাই তো বললে-কেন, কী, ব্যাপার কী কল্যাণী ? একটু চুপ থেকে, “এই নারী—যাক শুনতে চেও না বড় কষ্ট পাবে তা হলে। —আমাকে ভালোবাস না এই তো কথা; কিংবা অন্য কাউকে ভালবাসো।’ কল্যাণী মুখে-কপালে কাপড় টেনে দিয়ে তাড়াতাড়ি পাশ ফিরে শুল—কপালের যতটুকু দেখা যাচ্ছিল জরাজীর্ণ মানুষের মতো কুঁচকে রয়েছে। ধীরে-ধীরে খুকিকে তুলে নিয়ে নিজের বিছানায় চলে গেলাম আমি। বিছানায় আমার পাশে শুইয়ে মুখের দিকে চাইতেই দেখলাম চোখ চেয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে। —“তুই জেগে আছিস যে রে’ —‘বিত্তি’ —হ্যা, বৃষ্টি পড়ছে ঝমঝম, কেমন লাগে? —“বাবা।" —‘কী মা ?” —“মিছছি কোথায়?' একটু চুপ থেকে—মিছরি খেলে পিপড়ে কামড়ায়। জীবনী শক্তি ঢের কম; পিপড়ের কথা শুনে নিস্তব্ধ হল। মাথায় হাত বুলতে-বুলতে—“তোমার নাম কী খুকু? মনের অবসাদে সহসা কোনো জবাব দিল না। —‘কী নাম তোমার ?” অন্ধকারের ভিতর দু-তিনটে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে ধীরে ধীরে—আমাল নাম? —“হ্যা —'কুকুলানি’ এমন নিরপরাধ, এমন মিষ্টি অথচ এমন মর্মস্পশী। অন্ধকারের ভিতর আমার চোখের জল দেখল না মেয়েটি। ধীরে-ধীরে বললাম—'খুকুরানী’ 8 وl\