পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মা এসে বললেন, ‘একটা ছোকরা চাকর রেখেছি।’ —‘রেখেছ?” —‘হ্যা’ —‘কী নাম চাকরটার ?’ —হরিচরণ।’ —‘পাঁচ টাকা। রাখতে হয়েছে সুরেশবাবুর জন্য। চাকর ছাড়া ওর বড় কষ্ট।’ দেখতে-দেখতে পিসিমা এসে দাড়ালেন। বললেন—“মেজদার জন্য চাকর না রেখে দিলে চলে না তো দাদা।’ বাবা—আমিও তাই ভাবছিলাম’। —‘এই তো কাল পায়খানায় যাবেন—আমরা কেউ ওই দিকে ছিলাম না, কে ঘটিতে জল দেবে, প্রায় দশ মিনিট দাড়িয়ে থাকতে হল। —দশ মিনিট ? তাই তো চাকর থাকলে এ-রকম বিপত্তি তো হত না ?” —‘গাউটটা বেড়েছে কিনা, কলকাতায়ও যেতে পারেন না, পায়ে মালিশ করে দেবার লোকেরও নিতান্ত দরকার।’ বাবা—তা সুরেশ আমাকে আগে বললেই পারত; এসেছে তো দশ দিন, চাকর ছাড়া এত দিন তা হলে খুব কষ্টেই কাটাল। পিসিমা—“তা যা হবার তো হয়ে গেছে।’ —“তোমার টানাটানির সংসার দেখে মুখ ফুটে তোমাকে বলতে পারে নি হয় তো।” কী —আমার কিন্তু বরাবর মনে হচ্ছিল একটা চাকর ছাড়া বর্ষার মধ্যে ওর হবে করে ?” পিসিমা—মনে হলেই তো শুধু হয় না, ব্যবস্থা করতে হয়। —তা ঠিক; যাক, তুমি না হয় আমার হয়ে বেশ ভাল ব্যবস্থাই করেছ। —‘এর মাইনে কিন্তু পাঁচ টাকা।’ —“শুনেছি।’ —‘একটা কথা কিন্তু দাদা।’ —বলো।’ —মেজদা হয়তো টাকাটা আপনাকে দিতে চাইবে কিন্তু আপনি নেবেন না।’ —ওঃ, সে কথা কি তোমার কাছ থেকে শিখতে হবে।’ —তাহলে মেজদাকে আমি একটা কথা গিয়ে বলব ? —‘কী কথা?” —বলব যে দাদাকে টাকা নিয়ে সাধতে যাবেন না। তাহলে দাদা বিরক্ত হবেন। —আমি জানি সুরেশ আমাকে টাকা নিয়ে সাধতে আসবে না।’ —‘কী রকম ? Գ Հ