পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্ধকার নদীর এলোপাথাড়ির ভিতর জল শুধু এখন, রাত্রি শুধু—শাশ্বত রগত্রি । নিশীথের কলেজ কমিটির সেক্রেটারি হরিলালবাবুর বাড়িতে কলেজ কমিটির প্রণয় সব মেম্বারই এসে জড়ো হয়েছিলেন । কলেজের গভর্মিণ বডির কোনো মিটং নেই আজ । চার-পাচদিন পরে মিট’ । হরিলালবাবু এঁদের .ডকে আনেন নি । এমনি সারাদিনের কাজ কর্মের পর বেড়াতে-বেড়াতে হরিলালবাবুর বাড়িতে এসে জুটেছেন তারা । হরিলালবাবুর সুন্দর চালতে ফুলের রঙের নতুন বড় দালানটার দোতলার হল ঘরে বসে কথা হচ্ছিল । হরিলালবাবু এখানকার বার লাইব্রেরির এক জন বড় বুড়োটে উকিল । যখন এদেশে উকিল-টুকিল বেশি ছিল না, তখন প্রাকটস শুরু করে, সঙ্গে-সঙ্গে নানারকম হেসিয়ারি ব্যবসা চালিয়ে অনেক টাকা কামিয়ে গিয়েছেন । কলকাতায় বাড়ি আছে হরিলালবাবুর, ভুবনেশ্বরে আছে । হরিলালবাবু যদি আজকের দিনে ওকালতি শুরু করতেন তা হলে— লোকে বলে—এ টোকাটাও জুটত না তার, শামলা এটে বটতলায় দাড়িয়ে দিন কাটিয়ে দিতে হত । কিন্তু যে-লোকটা ঠিক সময়ে ঠিক কাজ করে গুছিয়ে নিয়ে সকলের ঘাড়ে পণ লটকে বেড়াচ্ছে তার সম্বন্ধে ধোয়ণটে কথা পেডে কী লাভ এখন অণর । কলেজ কমিটির সেক্রেটগরি হবার কথা কলেজের প্রিন্সিপলের । কিন্তু জলপাইহাটিতে কলেজের প্রিন্সিপাল কালীশঙ্করবাবু এখানকার লোক নন । কিন্তু এখানকার মানী মানুষকে মর্যাদা দেবার জন্যে আগ বাড়িয়ে হাত কচলাবণর মতো জুড়ি নেই এ দেশে কালীশঙ্করের। কী করে হরিলালকে একটু সুবিধে করে দেওয়া যায়, কী করে এখন একটু পিছিয়ে থেকে নিজের অণখেরের সুবিধা করে নেওয়া যায়, এ-জন্যে সব সময় চোখ-কান খাড" কালীশঙ্করবাবুর । বছর তিনেক আগে ছ-মাসের জন্যে কলেজ কমিটির সেক্রেটারির কাজ চাপিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু দেখেছিলেন যে কমিটির মিটঙে গভর্নিং বডির মেম্বারেরা সকলেই প্রণয় হরিলালের দোহাই দিয়ে কথা বলে, মুখ চেয়ে থাকে হরিলাল চাটুয্যের । মেম্বাররা সকলেই প্রায় ষাটের কাছাকাছি &S・