পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এ ৰয়সে কলকাতায় গিয়ে গাড়ি চাপা পড়ৰে, না, চাকরি করে পরিৰার খাওয়াবে ?”

  • তা পারবে । দেশ স্বাধীন হয়েছে’, কেমন কঠিনভাবে বললে যেন হরীত ; কথার মধ্যে রসকষ, বিবেচনা, দয়া কিছুই নেই যেন । অথচ এও মনে হয় যে ৰয়ে যাওয়া খারাপ ছেলে নয়, জিনিস আছে, কিন্তু খুব দূরের জিনিস—সুমন, নিশীথ বা এই পুরুষেরও কাজে লাগবার জিনিস নয়, কোন পুরুষে লাগে কে জানে, এক-আধজন ব্যক্তি নয়, সমস্ত ব্যক্তিরই যাতে সুবিধা সক্ষমতা হয় সেই দৃঢ়তার আবছা কাজে মন ডুবে গেছে তার, ঈশ্বর থেকে আরম্ভ করে মহাত্মা মোহনদাস পর্যন্ত যা পারলেন না সেই ভীষণ কাজে আরো কত শত-সহস্র বছরের ধোয়ী-শূন্যতার ভিতর এক ফোটা রক্ত, এক কণা শিশিরের মত হরীত ।

সাজিয়ে গুছিয়ে না, কেমন বিশৃঙ্খল ভাসা-ভাসা ভাবে এই কথাগুলো বোধ করতে লাগল । হারীত এসেছে, কিন্তু মার জন্যে কোনো টান নেই তার, ভানুর কথা জিজ্ঞেস করছে না, রানুর কথা না। লিকলিকে রেখায় দাগড়-দাগড়া খাজে কপালটাকে অন্ধ করে, কালো মুখে, জানালার ভিতর দিয়ে তাকিয়ে আছে । এর চেয়ে ওর বাবাকেও তো বেশি সরেস, বেশি তরুণ দেখায় । ‘ভানুর খোজ খবর রাখিস ? ‘ভানুর তো থাইসিস হয়েছিল।’ *ই্যা । তারপর কী হয়েছিল বলতে পারিস ? *না তো । কোথায় আছে ভানু ? মরে গেছে বুঝি ? সুমন কিছু ক্ষণ নিরেট হয়ে বসে থেকে বললে, তাই বুঝি মনে হয় তোর ? অনেক চিন্তা করছিল এত ক্ষণ হরীত । সুইচ পুড়ে যাওয়া বাম্বের মত হয়ে গেছে সে সব ; সেটাকে খসিয়ে ফেলে দিয়ে মার দিকে তাকিয়ে বললে, ‘ভানু মরে যায় যদি, কী করতে পারবে তোমরা । কলকাতায় কত থিাইসিসের রোগী—কেবলই তো মরছে । কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারছে না তো ' ‘তা তো পারছে না । কিন্তু ভানু বেঁচে উঠছে ।

  • বেঁচে উঠছে ? কোথায় ?
  • ৰ্কগচড়াপাড়া হাসপাতালে—” *ও, সেই থাইসিস হোমে । বেঁচে উঠল বুছি ? কে বললে তোমাকে ?

સ્વર8