পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অর্চনার কথা শুনে হরীত হাসি মুখে কিছু ক্ষণ চুপ করে থেকে কথা বলবার উপক্রম করতেই টের পেল হাসি নিভে গেল । ‘তুমি যা বলছ তার ভিতর ঢের খিচি আছে । কিন্তু সবচেয়ে আগে আমরা যে মুভমেন্টটা চালাতে যাচ্ছি সেটা কী রকম তুমি তো তা বিচার করে দেখলে না ! ‘কেউই তো তোমাদের সহ করে না । আমি বিচার না করেই তোমাদের পছন্দ করি না ।”

  • কেন ?"

‘কেবলই ভাঙবার চেষ্টা করা ভাল না।’ হার্যত হেসে ফেলল, হাসিটা ভিতর থেকেই এসেছে, ভিতরের টানেই ফুরিয়ে গেল আগবণর । হারীত অগস্তে-অণস্তে বললে, ‘গডব বলেই কোথাও-কোথাও ভাঙার দরকার দেখছি, কে বলে আমরা ভাঙছি শুধু ? ‘না-ভাঙো তো ওদের সঙ্গে মিলে সৃষ্টি করে । গড়বার কাজে ওরা এখন খুব বাস্ত, অনেক লোক দরকার ওদের ' ‘জলপাইহাটতে আছে বলেই তুমি এই কথা বলছ । মহিমবাবু একশ তিরিশ টীকায় চাকরি করছেন, তাকে নেবে ওরা ? তোমাকে নেবে ? আগমণকে নেবে ? ‘অমরণ তো এক্সপার্ট নই। কী হবে আমাদের নিয়ে ? তা হলে ওদের সঙ্গে মিলে সৃস্টি করব কী করে, ওদের বড-বড় মালিক, মালিকানার তবে তাদের পেটোয় লোকেরা গা ঘেঁষে। মহামানুষরা থেকে-থেকে দেশটা চালাতে চাচ্ছে বটে, কিন্তু ধাডি মনিবরাই তো চালাচ্ছে আজকাল । এদের, এদের সাঙ্গপাঙ্গদের সুবিধাবাদে, শিল্পাদরপনার চূডান্তে দেশের স্বাধীনতার কোনো মানেই খুঁজে পাওয়া গেল না আজ পর্যন্ত । ব্রিটিশ ভারতের অধীনতা-স্বাধীনতার পলিটিকস উড়িয়ে দিয়ে আগমণদের জড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তান্ত্রিক ডাইনির হাতে বানানো গাছের মত, এমনই এক জায়গায় যেখানে শিকড় নেই, দেশ নেই, নেতাদের শক্তি নেই, পলিটিকস নেই, কিছু নেই, সমস্ত পৃথিবী সমস্ত পৃথিবীকে গিলছে শুধু । অন্ধকার অন্ধকারকে খাচ্ছে— হরীত থেমে গেল । অৰ্চনা শুনে যাচ্ছিল । হরিণীতের শেষ হয়ে গেলে, অৰ্চনা তার মস্ত বড় কাল খোপায় হাত রেখে, একবার চাপ দিয়ে নিয়ে, হরীতের চোখে চোখ রেখে বললে, “আমাদের দেশে কেন, সব দেশেই এ রকম ; আজি >S○