পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শশাঙ্কবাবুর স্ত্রীকেও আমি চিনি না । ‘তা হলে যাবে না তুমি ? ‘আমি কী করে যাই হগরীত ?’ ঘুমের ঘোরে সুমনা কেমন যেন গোন-গোন গোন-গোন শব্দ করছিল ; শব্দটা মিইয়ে অস্ফুট হয়ে উঠল ; ঘুমের ভিতরে খানিকটা তৃপ্তি পেলেও কেমন একটা ব্যথার অণক্ষেপ যেন বোধ করছিল তার শরীর । হগরীত অণর আচনি নিস্তাপ নিঃস্বত্ব চোখে তাকিয়ে ছিল সুমনার দিকে, দু জনেই । সুমন পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়ল আবার ; নিঃশবিদত হয়ে গেল সব । “মাধব গোয়ালা কোথায় অাছে অণজকাল ?’ ‘বলতে পারি না তো । জলপাইহাটতে কিছু দিন এবার থাকছ তো হরীত ? হারীত কী করবে না-করবে, কী ইচ্ছা অনিচ্ছা, মনের কথাটা ভাল করে স্থির করতে পারে নি এখনো ; বললে, ‘মার অসুখটা ভালর দিকে না গেলে কলকাতায় যাওয়া হয় না। তুমি বলছ সময় লাগবে । এর ভিতর বাবা এসে পড়বেন ? দূরের একটা জামরুল গাছের সাদ-সাদা ফলের দিকে তাকিয়ে আচনি৷ বললে, ‘তা তোমার বাবা জানেন । আমি কী করে বলব, আমার জগনণর কথা হারীত ? ‘কে আর জানবে—অামি ভাবছিলুম –তুমি যদি না জান— সাদা-সাদা ফল, বাতাসে উডু-উডু জাম রুলের বড়-বড় সবুজ পাতা, সৃষ্টির আগুনের উৎস থেকে যেন সদ্য উঠে আসা একটা তরতাজা হলুদ পাখির দিকে তাকিয়ে ছিল অচfনা । "তোমার বাবা চিঠি লিখতে বলে গেছেন । ‘কাকে—তোমাকে ?’ ‘যখন খুব বেশি দরকার হয়, জানাতে বলেছেন । কিন্তু আমি লিখব না।’ ‘কেন ?' ' অচনা তাকিয়ে দেখছিল জামরুলের ঘন সবুজের ভিতর সেই পাখিটা ডালের থেকে ডালে লাফিয়ে যাচ্ছে, উড়ন্ত পাতার ঝালরে ঢাকা পড়ছে, বেরিয়ে আগসছে আবার— দরকারের টানে নিজেই তো চলে আসবেন নিশীথবাবু। যদি না আসেন—” ১৪৮