পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করে ওরা জান উড়িয়ে দিতে এসেছিল, কিন্তু বাস্তবিকই জিনিসটার মুখ নেই দেখে ঠাণ্ডা হয়ে অণদণব-অণদণব করতে-করতে চলে গেল । কেমন যেন আমাদের এই পৃথিবী—স্কুরঘর্ষণ ক্ষুরবর্ষণ চিড়িক-চিডিক পানি । এই পৃথিবীর মতিগতির কান টেনে মাথা পাকড়ে কাজ না করতে পারলে রক্ষা নেই মানুষের । সব সময়েই বান মাছের মত সটকে যাচ্ছে পৃথিবীটা, লেজে টেনে হাতের মুঠোর ভিতর রেখে দিতে হবে।’ রবিশঙ্কর কথাগুলো বলে ফেলে খুব একটা লম্বা টানে প্রায় অদ্ধেকটা সিগারেট শুষে নিয়ে ধোয়ণয়-ধেtয়ায় লাট করে ফেলল গাডির ভিতরট । এই তো গেল পূর্বপক্ষের কথা, এখন উত্তরপক্ষের কথা শোনে নিশীথ, দিল্লিতে যখন খুব গোলমাল চলছিল তখন প্রায়ই আমায় দিল্লি যেতে হত’, রবিশঙ্কর বললে, ‘আমার হেড-কোয়ার্টার্স ছিল অগ্রণয়, কিন্তু রোজই প্রণয় ট্রেনে চড়ে দিল্লি গিয়ে টাঙ্গীয় ঘুরে বেডাতে হত অফিসের নানা কাজে । আমার নিজের মিনার্ভ গাড়িটা তখন মাদ্রাজে পড়েছিল, ট্রেনে দিল্লিতে অবিশ্রাম হিন্মুদের মধ্যেই চলতে-ফিরতে হত অণময়, কিন্তু নিজে কে মোটেই নিরাপদ মনে করতে পারভুম না, অবিনাশলিঙ্গের মুণ্ডপাত করতে-করতে দুর্গা বলে খুলে পড়তুম রেণ জ ।” কেন ? হিন্দুদের ভিতর ঘুরে-ফিরে কী ভয় ? ‘দুটো মাস আমার জান খেয়ে নিয়েছে হিন্দুর ' ‘হিন্দুরা ? হিন্দুর বাচ্চাকে ? কিন্তু অবিনাশ লিঙ্গের কারসাজির ফলে আমার হিন্দ্র অভিজ্ঞান তো পাচার হয়ে গেছে নিশীথ । একেবারে মরণীয়া হয়ে ছুটে আগসত গুণ্ডাদের দল । এই খেলে—এই বুঝি খেয়ে নিলে—যদি মুখিয়ে জাপটে ধরত জয়হিন্দ হাকডে, এই শালা হারামিক বাচ্চ মুসলমান, কী বলে বোঝাতাম আমি মুসলমান নষ্ট । লাহোরে তো বুঝিয়ে এসেছি আমি হিন্দু নই, দিল্লিতে বোঝাতে হবে আমি মুসলমান নই। ভারতবর্ষের হিন্দু-মুসলমান দুটো জগত বলা হচ্ছে আজকাল ; কিন্তু চেহারা তো একই রকম, এ দু জগতের পার্থক্য শুধু এক-আধটা জায়গায়। তা তো লাহোর জয় করে এসেছে।’ রবিশঙ্কর সিগারেটে একটা টান মেরে সেটাকে জানলা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে বললে, ‘লাহোর জয় করে এসেছে, দিল্লিও জয় করতে হবে তাকে, একা বেচগরি ২৩o