পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করছে । কিন্তু এই দারুণ বিশৃঙ্খলার দিনে ইসকুল-কলেজের মাস্টাররা যে ইতস্তত নিক্ষিপ্ত হয়ে চাকরি পাচ্ছে না, অন্ন পাচ্ছে না, বাড়ি পাচ্ছে না, তাদের প্রতিষ্ঠানের কোনো মর্যাদাশীল কেউই যে তাদের রক্ষণ করছে না, অণশ্রম দিচ্ছে না এ নিয়ে লিখতে হবে না ? পে-কমিশনের টাকা পেয়ে গভর্নমেণ্টের জোয়গন পেয়ণদণরণ মাগনেলিয়ণ খাচ্ছে, এগজিবিশনে যাচ্ছে । মেয়েমানুষকে চোরণ বাজারের মাল পৌছিয়ে দিয়ে, স্ত্রীকে,শেয়ালদার বাজারের মাছ-তরকারি । লাইফ ইনসিওরেন্স করছে, সেভিংস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউণ্ট খুলছে । বেশ ভাল কাজ করছে, এরা যদি এখন সমস্ত না-করতে পারে এদের ওপরওয়ালারাই কি বরাবর এ সব করবে ? কিন্তু ছেলেমেয়েদের জন্যে গরু-মহিষের দুধ কিনে দেবার ক্ষমতা নেই, না-খেতে পেয়ে দুধের বেঁটা শুকিয়ে গেছে স্ত্রীদের, ঘর নেই, চাল নেই, কাপড়ের পেছনের দিকে ছিঁড়ে গেছে মাস্টারদের, তাদের স্ত্রীদের, এর বেসরকারি জীব বলেই এদের জন্যে কোনো কমিশন নেই—এ-রকম হতভাগ্য দেশে কোনো ইসকুলকলেজ না থাকাই ভাল । সব পুলিশ হয়ে যাক, সেপাই হয়ে যাক । প্রায় হাজার দশ-পনের টাকা জিতেন দাশগুপ্তের ব্যাগ লুটে সে নিয়ে যেতে পারে । কাল যদি টের পায় জিতেন, নিশীথকে সন্দেহ নাও করতে পারে । সোনার, হীরের গয়নগর কতকগুলি বাক্স আছে, এও যদি সরিয়ে নিয়ে যায়, নিশীথ দেরাজগুলো খুলে চাবি ঝুলিয়ে রেখে যায় । তা হলে কাল রাতে যে কলকাতার কালাকারদের হাতে জিতেনের খোয়া গেছে সব, এ বিষয়ে ওদের কণরুর মনে কোনো সন্দেহ থাকবে না আণর । নিশীথকে সন্দেহ করলেও তাকে ধরতে পারবে না । চাবিও হগওয়া করে দেবে সে, ব্যাগ-ট্যাগ সব । কোথাও হাতের ছাপ রাখতে যাবে না । টাকাকড়ি এখুনি সরিয়ে ফেলবে সে । রসা রোডের দ্বারকা সাতরার জিন্মায় রেখে আসবে । সঁতরা হয়ত এতক্ষণে ঘুম থেকে জেগেও গেছে, সংসারের কাজ আরম্ভ করে দিয়েছে । এই তো পনেরকুড়ি মিনিটের পথ এখান থেকে, ভোল৷ গিরির শিষ্য সাতরার বাড়ি আশ্চর্য রকমের সৎ মানুষ দ্বারক। তাকে গিয়ে বলবে । দেশের থেকে এলুম, শেয়ালদা থেকে সোজা তোমার এখানে, চাকরি-বাকরি স্ত্রীর গয়না এই গচ্ছিত টাকাগুলো তোমার কাছে রাখে দাদা । মেসে উঠেছি, অপজ-কাল এক সময়ে তোমার কাছে এসে টাকাগুলো নিয়ে যাব । এ সব টাকার কথা কাউকে কিছু বলবে ১৮