পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না, না, মোহিতা ঘোষের সঙ্গে আর দেখাই করবে না হয় তো নিশীথ । দেখা করলেও অন্য অনেক দূরের জিনিস নিয়ে । চাকরি-বাকরির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই । ‘আমিও একটা সম্বন্ধ পাকাতে চেষ্টা করছিলুম মোহিত ঘোষের সঙ্গে, জয়নাথ বললে, “কিন্তু কিছুতেই পারলুম না । ভারী চমৎকার মেয়ে । কিন্তু বড় কঠিন । মোহিতার সঙ্গে বেশি মেশে নি নিশীথ । প্রফেসর ঘোষের চেয়ে উচুদরের মেয়ে মোহিত । কিন্তু জয়নাথ তাকে নীচের দিকে ঠেলতে চাচ্ছে বুঝি ? সেটা সম্ভব হচ্ছে না বলে কঠিন মনে হচ্ছে মোহিতাকে ? নৃপেনের সঙ্গে মোহিতার কোনো সম্বন্ধের কথা সেই জন্যেই বুঝি জুড়ে দিচ্ছে জয়নাথ ! "একটা কাজ দিতে হবে আমাকে আপনার কলেজে ।” ‘আপনি তো সেকেণ্ড ক্লাস এম-এ নিশীথবাবু।” "ফ ত সেকে গু ক্লাস তো কলেজে প্রিন্সিপ্যালি করছে—” 'অনেক আগে ঢুকেছিলেন ওঁর। আমাদের কলেজে কমার্সে কাজ নেবেন ?" ‘কত মাইনে হবে জয়নাথবাবু ? দুশ পাওয়া যাবে ? 'না, একশর বেশি দিতে পারব না আমরা ; টেম্পরগরি বেসিসে । তবে এখন কোনো ভেকেন্সি নেই। পরে হতে পারে, শকুনের বাচ্চারা ঝাপিয়ে পড়বার অণগে খোজ নেবেন অণপনি, আণচচ্ছা ? জয়নাথবাবু উঠে ভেতরে চলে গেল । সুজয়নাথ ঢুকে পড়ে নিশীথকে বাইরে যাবার জন্যে অনুরোধ জানাল, ঘরে মেয়েরা আসবেন । নিশীথকে চেনে বটে সুজয়নাথ, কিন্তু চিনতে চাইল না । জয়নাথের মত বোকা সে নয় । দোস্ত মহম্মদ লেনের আবহাওয়াটা এখনো ভাল করে কাটিয়ে উঠতে পারে নি জয়নাথ, কিন্তু কোনো মা ছিল না যেন কোনো দিন, জয়নাথের বৌয়ের মত, সুজয়নাথের । বালিগঞ্জ প্লেসের হল-ড্রয়িংরুমের ভেতর থেকে বেরিয়ে পড়েছে যেন সে । একে দিয়ে অন্তত কি নিশীথবাবু কেমন আছেন, বসুন’, বলিয়ে নেবার জন্যে মোহিত ঘোষকে সঙ্গে করে এ-বাড়িতে এক দিন ঢুকতে ইচ্ছে করে নিশীথের । এই ছেলেটিকে দেখলে এমনই ছেলেমানুষ হয়ে পড়ে মানুষের মন । কিন্তু তবুও মিসেস ঘোষ ছেলেমানুষ নন, নিশীথও নয়, সুজয়নাথও টেস্ট টিউব নয় এখন অণর—জয়নাথের কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল ।