পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘ক্যানাফুল খুব ভাল লাগে তোমার ? সুলেখা বললে । কিন্তু দেখা গেছে যে অনেক মানুষই বিশেষত যারা গেড়ে বসেছে, সমাজ চালাচ্ছে, রাষ্ট্র চালাচ্ছে, লুটছে, তারা এত অবোধ যে তাদের হৃদয়ের মোড় ঘুরিয়ে ঠিক দিকে নেওয়া কিছুতেই সম্ভব নয় । কী করে উন্নতি হতে পারে তাদের ধ্বংস না করে ?’ বাবা, কেমন মারমুখ হয়ে কথা বলছে, ছেনি-টেনি সঙ্গে নিয়ে এসেছ নাকি, হগরীত ? সুলেখার দু বছরের বড় বোন মনোলেখা ওরফে জুলেখা এসে বললে, ‘হুরির মত দুটি বোন । ভাই নেই, বাবা নেই, নেই কোনো আত্মীয়-স্বজন, শুধু ম৷ আছেন, এক-অtধটি চাকর অাছে।’ ‘আমি আসছি হারাত, এখুনি আসছি, তুমি কিন্তু পালিয়ে যেও না’, বলতেবলতে জুলেখা পাশের ঘরে চলে গেল । পাশের ঘরের কিনার দিয়ে সিড়ি চলে গেছে দোতলার দিকে—ছাদের দিকে ; সেই দিকে চলে গেল নাকি জুলেখা ? চোত-বেণশেখের রোদ বাতাস, বাতাস রেগদের বণঝের সঙ্গে সত্যিই কেমন মানিয়েছে এই ফুলগুলো । পাশে সবুজ ঘাস রয়েছে, মাথার ওপরে নরম নীল, সব সময়ই হুড়-হুড় করে ছুটে আসছে অশরীরী বাতাস । বেশ দেখায় কিন্তু এ সবের ভেতর এই আগুনের জাত ফুলগুলো— ‘কলকাতায় এত বড় একটা দাঙ্গ হয়ে গেল বছর দেড়েক অণগে । আমরা ছিলুম সে সময় কলকাতায় । মা, জুলেখা, আমি’— 'জুলেখা তোমার দিদি তো’— ‘ওকে আমি জুলেখা ডাকি, সুলেখা বললে, তোমাকে তো হরীত ডাকি, জুলেখা আর আমি । কত বয়স তোমার ?

  • আমার ত্রিশের কাছাকাছি—’ দিদির তো একুশ, আমার উনিশ । তুমি কি আমাদের চেয়ে অনেক বড় হরীত ? ‘কী মনে হয় তোমার ?’ ‘তোমাকে যদি খুব বড় মনে হত, কাছে ঘেঁষতে বাধো-বাধো ঠেকত, তা হলে তোমাকে হরীত কণক ডাকতুম । কিন্তু তা তো নয় । তবে, তুমি যদি চাও তোমাকে হরীতদা ডাকতে পারি, জুলেখা তো মনে-মনে ডাকে, সুলেখা বললে, কিন্তু তোমাকে হরীত ডাকি বলে তুমি আমাদের ভিতর এক জন হয়ে

UరిOS)