পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টেলিগ্রাফের তার ছি*ড়ে, রেলওয়ে ব্রিজ ভেঙে ফেলে’— ‘তুমি কোন পার্টির ? ‘কোনো পাটির না ।” ‘তুমি যে কমু্যমিস্ট তা আর বলে দিতে হবে ? ‘কমু্যনিস্টদের কেউ আমাকে চেনে না।’ তবে কি একলব্যের মত তাদের পুজো করছ ? ‘আমি কি স্ট্যালিনের মত কথা বলছি সুলেখা ? 'কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কথা বলছ তুমি । হারীত সুলেখার দিকে তাকিয়ে অবসন্ন হয়ে বললে, "ছিলাম তে। কংগ্রেসে অনেক দিন । অহিংসার দিনেও হিংসে করেছি । রিভলভার হাতে নিয়ে ঘুরেছি-ফিরেছি তো অনেক দিন, বোমা তখনও আসে নি। অণু ফাটে নি । কিন্তু বিরুদ্ধ শক্তিটা ষে অ্যাটম বোমার মতই, রিভলভারের মুখে সেটা উপলব্ধি করেছিলাম দশ-বার বছর আগেই। কিন্তু তবুও কি নিরেট অর্ণ স্মশ্রদ্ধা ছিল । এইটেই দরকার—চোখ মেলে চেয়ে, সব বুঝে-শুনেও, বেহেড আত্মপ্রত্যয়ী হওয়া —নিজের জীবনটাকে পায়ের নীচে রেখে ; না হলে আজকের দিকচিহ্ন ডিঙিয়ে, কালকের বড় কাজ কিছুতেই ঘটতে পারে না ইতিহাসে । যার ঘটাচ্ছে তারা এই রকম লোক ।” ‘ইতিহাস তে নিজের বেগে চলেছে ।” ‘কে বলেছে তোমাকে ? নিজের বেগে—মানুষকে বাদ দিয়ে ? ‘ইতিহাস তো অ্যাটম বোমার মত । কী করত মানুষ তার রিভলভার নিয়ে ? হরীত হেসে বললে, ‘তুমি আমার বাবার মত কথা বলছ সুলেখা, হারাতের বাবা—নিশীথবাবুর কথা বলছে হরীত। এ কলেজে নিশীথবাবুর ছাত্রী ছিল সুলেখা । প্রফেসরের মনোভাব যতটা সম্ভব অনুচিন্তন করে দেখেছে সুলেখা । কিছু প্রভাব পড়েছে বটে তার জীবনে নিশীথবাবুর । ‘বাবা চিন্তা করে উপলব্ধি করেন, কিন্তু চিন্তাই করেন শুধু, এত বেশি তলিয়ে ভেবে মরেন যে শূন্যতা ছাড়া কোনো মীমাংসাই নেই তার পৃথিবীতে । নিশীথবাবু?—সুলেখা একটু অন্যমনস্ক হয়ে বাইরের দিকে তাকাল, শুনলুম নিশীথবাবু আমাদের কলেজ ছেড়ে চলে গেছেন । \5ჯO