পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রেখে পেনসিলটা বাগিয়ে নিয়ে জুলেখা বললে, “আমাকে ঠিকানা দাও নিশীথবাবুর— ‘কিছু হবে না।’ ‘কেন, মাইনে বাড়িয়ে দেওয়া হবে তার ।" ‘তিনি আসবেন না আর এ কলেজে ।” ‘যা চাচ্ছিলেন তাই তো দেওয়ণ হবে তাকে । হারীত কোনো উত্তর দিল না, নোটবুক-পেনসিল ধরে খুব বিশেষ আগ্রহে বসেছিল জুলেখা, কিন্তু ঠিকানা জানাবার মত কোনো তাগিদ ছিল না হারীতের । ‘সত্যিই আসবেন না ?’ ‘অর্চনাকে বলে গেছেন আসবেন না আর ' ‘অচনা কে ? জিজ্ঞেস করল জুলেখা, ও, বুঝেছি, চিনি আমি । প্রফেসর ঘোষণলের স্ত্রী ।’ ‘হ্যা, জানি, জুলেখা বললে, ‘ঠিক সময়ে ঠিক কাজ করতে হয় । কলেজ তা করছে না বলেই এই সব হচ্ছে ।" ‘কলেজের গভর্নিং বডিতে তুমি গিয়েছ না কি জুলেখা ? হারীত বললে, ‘মনে হচ্ছে কলেজ কমিটিতে ঢুকেছ তুমি । কর্তৃপক্ষের কানে কিছু জল ঢুকবে তুমি থাকলে ।" জুলেখা মাথা নেড়ে বললে, ‘ওয়াজেদ আলিরা আছেন। তাদের দিয়ে একটা কিছু করানো যেতে পারত। না, আমি নেই কলেজ কমিটিতে । ঢুকে পড়তে পারা যায় হরিলালের এক জন নমিনি হয়ে, কিন্তু সে রকম ভাবে গিয়ে কোনো লাভ নেই, হাত-পা বাধা থাকবে । কেমন পেটে-পেটে কচ্ছপের মত যেন হরিলাল, পিঠের খোলা চিড়িয়ে রোদে আরাম খাচ্ছে, পাশে-পাশে গুগল শামুকদের নিচ্ছে সব, হিমাংশু চক্কোত্তি, অন্তিম দত্ত । গার্জেনদের প্রতিনিধি হয়ে ঢুকতে পারা যায় কলেজের গভর্নিং বডিতে, কিন্তু ? জুলেখা একটু থেমে বললে, “আমার হাতে এমনিই ঢের কাজ, ও-দিকে যাব না আমি অণর’— হারাতের দিকে তাকিয়ে জুলেখা বললে, “ঠিকানাটা তবু তুমি দাও আমাকে ।’ “লিখতে পারবে না তাকে যে আমার কাছ থেকে ঠিকানা পেয়েছ।’ ‘ক্ষ্যাপা তুমি হারীত, সে কথা সেধে তাকে লিখতে যাব কেন ?" "b/>