পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৪১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই রকম করে গড়েই ভাল করেছ তুমি । কিন্তু এমন অনুভবের পরিপূর্ণ সময় চলে যাচ্ছে তার। দুটো বছর যাক, একটা বছর হয় তো, হয় তো অতদিনও না, চলে যাক, তার পর নিজের এই অপরূপ উপলব্ধির থেকে ঢের দূরে সরে যাবে সে । এ অনুভবের অনেক খুঁটিনাটিই সে হারিয়ে ফেলবে—আবেগপ্রবণ এমন জীবন থাকবে না আগর, না কামনার জন্য না ভালবাসার জন্য । প্রেমের এই বিস্তৃত গভীর অর্থ সে হারিয়ে ফেলবে । জীবনে প্রেম থাকবে না তখন আর ; আকাঙ্ক্ষীরও কোনো নিগূঢ় গাঢ়তা থাকবে না ; স্কুল একটা ক্ষিদে মাঝে-মাঝে জেগে উঠে নিভে যাবে মাত্র ; সৌন্দর্যকেও তখন মেদ বলে মনে হবে শুধু ; সে বাতাসে ভালবাসা বেঁচে থাকতে পারে না । যখন জীবন সব রকমেই তৈরি হয়ে দাড়িয়ে ছিল—কল্যাণীকে পছন্দ করতে, গেল কেন প্রমথ ? একে ভালবাসতে গেল কেন ? হায়, পরিপূর্ণ পাখিটাকে তৈরি করে পাকের ভিতর ফেলে দেওয়া ? ফুলটাকে বিছের ডিম বিছের বাচ্চ দিয়ে খাওয়ানো ? কল্যাণীদের বারাকপুরের বিয়েবাড়ির বর্ণনা এখনো চলছে। কিংবা কথাটা অন্য কোনো দিকে ঘুরে চলেছে হয় তে।। যাই হোক, এরা খুব ব্যাপৃত রয়েছে ; সাংসারিক জীবনের আটপৌরে আঁটসঁটের কথায় কল্যাণী খুব সহজেই প্রবেশ করতে পারে—নানা দিক দিয়েই নিজের জীবনের আটপটা এ বেশ বোধ করে—বৈঠক যেমন ভাল লাগে এর, কাজও তেমন, ফুর্তিও তেমন, আমোদপ্রমোদও তেমন ; শুধু চিন্তার মুখোমুখি হয়ে এ ছেলেমানুষ হয়ে পড়ে, ভাবতে চায় না, তেমন ভাবে অনুভক করতেও ভয় পায়, নিজেকে ধরতে পারে না, অপরকে ধারণা করতে গিয়ে পিছিয়ে যায়, চোখ কপালে তুলে ভাবতে বসলে একে বড় কুৎসিত দেখায়, বড় শূন্য ; প্রমথের প্রতি কথায়ও তবু একে ভাবতে হয় যে এর স্বাভাবিক জীবনের স্বচ্ছন্দতার চাবিও প্রমথের কাছে আছে বটে কিন্তু সেটাকে প্রমথ, বড় একটা খাটাতে চায় না । কল্যাণীর সঙ্গে বিয়েবাড়ির বা শাড়ির বা হাড়ির গপ্প করে কী হবে ? সে সৰ মানুষকে কোথাও পৌছিয়ে দেয় না। میه 8S